কলকাতা: চাকরি করছেন ঠিকই। কিন্তু পড়ুয়াদের নিয়ে আদৌ ভাবছেন কি শিক্ষকরা? দূরের স্কুলে বদলিতে শিক্ষকদের অনীহা প্রসঙ্গে একটি মামলায় এমনই প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। তাঁর পর্যবেক্ষণ, সরকারি স্কুলের শিক্ষকরা সরকারের থেকে বেতন নিয়ে নিজেদের সন্তানদের বেসরকারি স্কুলে ভর্তি করছেন। পছন্দ মতো স্কুলে বদলির আবেদনও করছেন। তবে সরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়ে অতটা চিন্তা করছেন না শিক্ষকদের একাংশ।
শিক্ষক বদলি মামলায় কড়া পর্যবেক্ষণ কলকাতা হাই কোর্টের। ‘সন্তানসম’ ছাত্রছাত্রীদের ভবিষ্যতের কথা তুলে স্কুল শিক্ষা দপ্তরের প্রতি বিচারপতির বার্তা, শিক্ষামন্ত্রীকে বলে আইন সংশোধন করিয়ে এই সমস্যার সমাধান হোক। বেশি পড়ুয়া যেসব স্কুলে, সেখানে শিক্ষকদের বদলি করা হোক।
দূরের স্কুলে বদলিতে শিক্ষকদের অনীহা প্রসঙ্গে একটি মামলায় বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু এদিন নানাভাবে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘সুবিধামতো স্কুলে শিক্ষকরা বদলি নিচ্ছেন। কিন্তু ছাত্রছাত্রীদের কথা কতটা ভাবছেন? ওই ছোট ছোট পড়ুয়াদের যদি জিজ্ঞাসা করি কী শিখেছ, সদুত্তর পাব তো? উত্তর আপনাদের জন্য স্বস্তিদায়ক হবে তো?’
সরকারি স্কুলে পাঠ্যক্রম কতটা ঠিকমতো শেখানো হচ্ছে, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি। প্রসঙ্গত, পুরুলিয়ার একটি স্কুলে শিক্ষক বদলি নিয়ে দায়ের করা মামলা চলছে বিচারপতি বসুর এজলাসে। সেই মামলার শুনানিতেই তাঁর এই পর্যবেক্ষণ।রাজ্যে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগের ঘোষণা করা হয়েছে। সেই প্রসঙ্গ তুলে বিচারপতি বসুর প্রশ্ন, শিক্ষক-ছাত্রর অনুপাত যদি সমান না থাকে, তাহলে এই অতিরিক্ত নিয়োগ করে লাভ কী? তাঁর পরামর্শ, যেসব স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা খুব কম, তাদের কাছের কোনও স্কুলে ভর্তি করানো হোক। আর বেশি পড়ুয়া সম্পন্ন স্কুলে বদলি করা হোক শিক্ষকদের। এ বিষয়ে স্কুল শিক্ষা দপ্তরের উদ্দেশে তিনি বলেন, প্রয়োজনে শিক্ষামন্ত্রীকে আইন সংশোধন করতে বলা হোক। এ বছর মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী কমেছে। তা নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বিচারপতি বসু।
বিচারপতি বসুর মন্তব্য, ‘মাধ্যমিকে ৪ লক্ষ পরীক্ষার্থী কমে গেল। আর রাজ্য ১০ হাজার শিক্ষক প্রয়োজন বলে ঘোষণা করেছে।এই অতিরিক্ত শিক্ষকদের কী প্রয়োজন? অর্থের অপচয় ছাড়া কোনও লাভ হচ্ছে কি?’