আরামবাগের কেশবপুরে ষষ্ঠীর দিন তিনটি বনেদিবাড়ির একযোগে বেলবরণ

মহেশ্বর চক্রবর্তী

একই পাড়ায় তিন তিনটি বনেদি বাড়ির পুজো ঘিরে আজও উন্মাদনা তুঙ্গে। হুগলির আরামবাগ (Arambag) ব্লকের কেশবপুর অঞ্চলে একই পাড়ায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঘোষ বাড়ি, সরকার বাড়ি ও দত্ত বাড়ির দুর্গা পুজো। পারিবারিক সূত্র থেকে জানা যায় যে, এই তিনটি বাড়ির পুজোতেই দেবী চতুর্ভুজা রূপে আবির্ভূত হন। এই তিন বনেদি বাড়ির পুজোর শুভ সূচনা হয়েছিল ১৮৬৭ সালে। সরকার বাড়ির প্রতিমা বিভিন্ন সাজে সজ্জিত হয়ে থাকেন। অন্যদিকে ঘোষ বাড়ির প্রতিমা ডাক সাজে সেজে ওঠেন। মহালয়ার দিন পার্শ্ববর্তী মুণ্ডেশ্বরী নদী গিয়ে এই তিন পরিবারের পুজোর ঘট তোলা হয়। সেই দিন থেকে ষষ্ঠী পর্যন্ত চলে চণ্ডীপাঠ। এই পরিবারের সদস্যরা বর্তমানে যারা কর্মসূত্রে বাইরে থাকেন, তারা সবাই মহালয়ার দিন থেকে পুজোতে গ্রামের বাড়িতে আসতে শুরু করেন। মন্দিরের পাশেই আছে প্রায় ২০০ বছরের পুরনো বেল গাছ। ওখানেই ষষ্ঠীর দিন তিন পরিবারের একযোগে অনুষ্ঠিত হয় বেলবরণ। তবে তিন বনেদি বাড়ির দুর্গা পুজো রীতিনীতি নিজস্ব পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হয়। সরকার বাড়ির দুর্গা পুজোর বৈশিষ্ট্য হল এখানে দশমীর দিন কুমারী পুজো অনুষ্ঠিত হয়। এই পুজোয় বলি প্রথা চালু আছে। সপ্তমী, অষ্টমী, নবমী পাঁঠা বলি হয়। পুজোয় অষ্টমী নবমী সন্ধিক্ষণে ১০৮ টি প্রদীপ জ্বালানো হয়। তিথি নক্ষত্র ও পঞ্জিকার সময় অনুসারে বলি দেওয়ার রীতি প্রচলিত আছে। অন্যদিকে, ঘোষ বাড়ির পুজোয় কোনও পাঁঠা বলি হয় না। বিভিন্ন ফল ও সবজি বলি হয় পুজোর প্রত্যেক দিন। অন্যদিকে দত্ত বাড়ির পুজোর ক্ষেত্রেও তাদের বনেদি রীতি মতো পুজো হয়।
এখানে দত্তবাড়ি, ঘোষ বাড়ি এবং সরকার বাড়ি পুজো একই পাড়ায় তিনটি দুর্গা দালানে অনুষ্ঠিত হয়। তিনটি বনেদি বাড়ির প্রতিমায় প্রথম থেকেই চতুর্ভুজা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দত্তবাড়ি, ঘোষ বাড়ি এবং সরকারের বাড়ির এই বনেদি পুজোকে ঘিরেই উৎসবে মেতে ওঠেন গ্রামের মানুষ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

16 − 10 =