আরবের খেজুর চাষ বাংলার মাটিতে, নয়া দিশা হাসনাবাদে

বসিরহাট: বাংলার মাটিতে ফলছে আরবের মরিয়ান খেজুর। মরু রাজ্যের স্বাদু খেজুর গ্রামে চাষ করে তাক লাগিয়েছেন মোটর মেকানিক আধুলহামিদ মণ্ডল। তিন বছরে গাছে ভালো ফল আসায়, তাঁর আশা খেজুর বিক্রি করে লাভের টাকা ঘরে আসবে এবার। আর আধুল আর্থিকভাবে লাভবান হলে, তিনি যে অন্যান্য চাষিদের কাছে পথিকৃত হয়ে উঠবেন তা বলাই বাহুল্য।

উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটের হাসনাবাদ ব্লকের পাটুলি খানপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বেনা গ্রামের বাসিন্দা আধুলহামিদ মণ্ডল। তার ছোট থেকে স্বপ্ন ছিল ব্যতিক্রমী কিছু করার। সেই কাজই করে দেখিয়েছেন তিনি। গাড়ি মেকানিক আধুল। আর্থিক স্বচ্ছলতা ছিল না পরিবারে। তারপরেও সংসারের টাকা বাঁচিয়ে সেই টাকায় হাজিদের মাধ্যমে আরব দেশ থেকে সুস্বাদু ও খাদ্যগুণে ভরপুর মরিয়ান খেজুর গাছের বীজ এনে চাষ শুরু করেছিলেন। তার আপ্রাণ চেষ্টায় অবশেষে ৩ বছর ২ মাস পর সেই খেজুর গাছে ফল আসতে দেখে খুশিতে আত্মহারা আধুল হামিদ। বহুদিন পর তার স্বপ্নপূরণ হওয়াতে পরিবার ও স্থানীয় লোকজনও খুশি। আধুল হামিদ মণ্ডল জানান, তিনি অটো গ্যারেজে কাজ করতেন। হাজি সাহেবের মাধ্যমে বীজ নিয়ে এসে চারা তৈরি করেন। তিনি গ্যারেজের কাজ কম করে, খেজুর গাছের দিকে বেশি সময় দিতেন। তার স্ত্রী জানান সংসার চালানোর টাকা সরিয়ে খেজুর গাছের সরঞ্জাম যেমন তেল, সার প্রভৃতি কিনে আনতেন। প্রচুর পরিশ্রম করে ৩০টির বেশি খেজুর গাছ লাগন। তিন বছর দুই মাস পর গাছে ফলন দেখা দেয় এতে খুশি হন আধুল হামিদ মন্ডল ও তার পরিবারের লোকজন। এখন দূর দুরান্ত থেকে এই খেজুর দেখার জন্য ভিড় জমাচ্ছেন তার বাড়িতে। গ্রামবাসীর এই খেজুর খেয়ে খুব প্রশংসা করলেন। বাড়ির সবাই জানালেন আমাদের খেজুর গাছে ফলন ধরার পর আমরা সকলেই ভীষণ খুশি।
জানা গিয়েছে আরবের খেজুরের স্বাদ, মিষ্টত্বের জন্যই এর জগৎজোড়া খ্যাতি। স্বাভাবিকভাবে খেজুরের দামও খোলা বাজারে বেশ ভালো। গুণগত মানের ওপর এর দাম নির্ভর করলেও মোটামুটি ৭০০-১০০০ কেজি প্রতি এর দাম হয়। আশা, আধুল এত কষ্ট শেষে লাভের মুখ দেখবেন। তাঁর সাফল্য বাংলায় খেজুর চাষে নয়া দিশা দেখাবে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

sixteen − 14 =