ইডি হেপাজতে বিনিদ্র রজনী যাপন অনুব্রতর

মঙ্গলবার সকাল ৬টা ৪৫ নাগাদ আসানসোল সংশোধনাগার থেকে বের হয়েছিলেন অনুব্রত। এর পর কলকাতা হয়ে পৌঁছান দিল্লিতে। অনুব্রত মণ্ডলকে কলকাতা থেকে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার পর রাত সাড়ে ১১ টা নাগাদ তাঁকে রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টের বিচারক রাকেশ কুমারের এজলাসে ভার্চুয়ালি পেশ করে ইডি। তবে ভার্চুয়ালি শুনানি প্রক্রিয়া বেশিক্ষণ চলেনি। রাতেই কেষ্টকে নিয়ে বিচারকের বাড়িতে পৌঁছে যান ইডির গোয়েন্দারা। রাত ১টা নাগাদ অনুব্রতকে নিয়ে দিল্লির অশোকবিহারে বিচারক রাকেশ কুমারের বাড়িতে পৌঁছন ইডির আইনজীবী ও আধিকারিকরা। সেখানে সশরীরে অনুব্রতকে পেশ করে শুনানি শুরু হয়। ইডির তরফে কেষ্টকে ১৪ দিনের জন্য বিচারবিভাগীয় হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানানো হয়। দু পক্ষের সওয়াল জবাব শুনে বিচারক কেষ্টকে আগামী ১০ মার্চ পর্যন্ত অর্থাত্‍ তিন দিনের জন্য ইডি হেফাজতের নির্দেশ দেন।এরপর দিল্লির বিচারকের বাড়িতে শুনানি শেষে যখন ইডি-র লক আপে তাঁকে ঢোকানো হয়, তখন ঘড়ির কাঁটায় রাত দুটো পেরিয়েছে। তবে টানা ১৯ ঘণ্টার ধকলের পরেও দিল্লি গিয়ে প্রথম রাতে দু’ চোখের পাতা এক করতে পারেননি অনুব্রত এমনটাই অন্তত সূত্রে খবর। ইডি-র তরফ থেকে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার সারারাত প্রায় জেগেই কাটিয়েছেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি। এমন কি, দিল্লিতে ইডি-র সদর দফতরের লক আপের ভিতরে তাঁকে পায়চারিও করতে দেখা গিয়েছে। তবে বুধবার সকালে চা বিস্কুট খান তিনি। খেয়েছেন জলখাবারও। তবে এদিন সকালে বাংলা কাগজ চেয়েছিলেন অনুব্রত, এমনটাও জানা গেছে।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার গভীর রাতের শুনানিতে অনুব্রত মণ্ডলকে তিন দিনের জন্য ইডি হেপাজতে পাঠান বিচারক রাকেশ কুমার। এদিকে বুধবার দিল্লিতে হোলির ছুটি। ফলে শুনসান ইডি-র সদর দপ্তর। শুধুমাত্র অনুব্রত মণ্ডলকে জেরা করার জন্যই ইডি দপ্তরে যান এই মামলার তদন্তকারী অফিসার পঙ্কজ কুমার এবং তাঁর দুই সহযোগী। এরপর বেলা ১২ টার পর ইডি সদর দফতরেই অনুব্রত মণ্ডলকে জেরা শুরু হয়। আর এই জেরা চলবে দীর্ঘক্ষণ ধরে এমনটাও জানানো হয়েছে ইডি-র তরফ থেকে। তবে তার আগে ফের একবার মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়।

দিল্লিতে নিয়ে জেরা করলে অনুব্রতর উপরে মনস্তাত্বিক চাপ অনেকটাই বাড়ানো যাবে বলেই মত ছিল ইডি কর্তাদের। এবার নিজের এবং পরিবারের সদস্য ও ঘনিষ্ঠদের বিপুল পরিমাণ সম্পত্তির উত্‍স জানতে রাজধানীতে বসেই অনুব্রতর উপরে চাপ বাড়াবে ইডি। দিল্লির মাটিতে অনুব্রত কীভাবে ইডি-কে সামলান, সেটাই এখন দেখার। গরু পাচারের বিপুল পরিমাণ টাকা আর কার কার কাছে গিয়েছে, তাও অনুব্রতর থেকে জানা লক্ষ্য ইডি কর্তাদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × 2 =