অনুব্রতকে দিয়ে বয়ান লেখাতে গিয়ে সমস্যায় ইডি আধিকারিকেরা

অনুব্রতকে দিয়ে বয়ান লেখাতে গিয়ে ফ্যাসাদে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ইডি-র আধিকারিকেরাও। কারণ, লিখতে পারেন না অনুব্রত, এমনটাই দাবি বীরভূমের এই দোর্দণ্ডপ্রতার তৃণমূল নেতার। উপায় না পয়ে শেষ পর্যন্ত বয়ানের শেষে শুধু সইটুকু করেন বলে খবর ইডি সূত্রে।

এদিকে নিয়ম অনুসারে ইডি-র বয়ান রেকর্ড করে ৫০ পিএমএলএ অ্যাক্ট অনুযায়ী। এই আইনে বলা আছে, অভিযুক্তকে কিংবা সাক্ষীকে নিজেকেই নিজের হাতে বয়ান লিখে দিতে হয় অফিসারের সামনে। প্রশ্ন তদন্তকারীরা অফিসার করেন। উত্তর অভিযুক্তকে লিখতে হয়। গোটা প্রক্রিয়ার ভিডিও রেকর্ড হয়। এদিকে বুধবারই ইডি হেফাজতের প্রথম দিনে অনুব্রতকে বলা হয় নিজে হাতেই নিজের বয়ান লিখতে। তাতেই ফ্যাসাদে পড়ে যান তিনি। সূত্রের খবর, এদিক-ওদিক তাকিয়ে শেষমেশ তাঁর স্বীকারোক্তি, ‘আমি লিখতে পারি না। শুধু নাম সই করতে পারি।’ এই পরিস্থিতিতে সমস্যায় পড়েন ইডি-র আধিকারিকেরাও। জটিল পরিস্থিতিতে আবারও জরুরি ভিত্তিতে শুরু হয় আলোচনা।

এখানে বলে রাখা শ্রেয়স কোন অভিযুক্ত কিংবা সাক্ষী যাতে নিজের দেওয়া বয়ান তাঁকে দিয়ে জোর করে লেখানো বা ভয় দেখিয়ে লেখানো বলে পরবর্তীতে আদালতে দাবি করতে না পারে সেজন্যই ইডিকে এই বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া আছে আইনের মাধ্যমে। এক্ষেত্রে অনুব্রত মণ্ডল যেহেতু একজন রাজনৈতিক দলের নেতা, রাজনৈতিক কারণেই হোক কিংবা অন্য কোন কারণে, তিনি পরবর্তীতে যাতে নিজের বয়ান থেকে সরে যেতে না পারেন। কিংবা তদন্তকারী সংস্থার বিরুদ্ধে জোর করে বয়ান লেখানোর অভিযোগ আনতে পারেন, তাই অনুব্রত মণ্ডলের ক্ষেত্রে তাঁকে দিয়েই নিজের বয়ান লেখানোর দিকে জোর দিয়েছিল ইডি। কিন্তু তাদের জানা ছিল না, যে তিনি লিখতে পারেন না। ফলে জেরা পর্বের শুরুতেই বেশ কিছুটা সময় নষ্ট হয় এই কারণে।

এরপরই এক সিনিয়র অফিসারের নির্দেশে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর মেনে একজন নিরপেক্ষ সাক্ষীকে নিয়ে আসা হয়। যিনি জেরা পর্বে অনুব্রতর দেওয়া উত্তর লিখেছেন। জেরা প্রক্রিয়ার শেষে অনুব্রত মণ্ডলকে তাঁর দেওয়া উত্তর পড়ে শোনানো হয়েছে। সব ঠিক আছে বলে জানালে সেই কাগজের নীচে সই করেন অনুব্রত। পিএমএলএ আইন অনুযায়ী, ইডির কাছে দেওয়া বয়ান আদালতে গ্রহণযোগ্য। অর্থাৎ আদালতে বিচারকের সামনে যে জবানবন্দির সমান। আইনি ভাষায় একে বলা হয় জুডিসিয়াল স্টেটমেন্ট। ইডি অফিসারের সামনে দেওয়া এই বয়ানকেও জবানবন্দি হিসেবেই দেখা হয়।

পরবর্তীতে নিরপেক্ষ সাক্ষী এনে তাঁকে দিয়ে কেষ্টর বয়ান লেখানো হয়।

এদিকে ইডি সূত্রে এও জানানো হয়েছে, অনুব্রত মণ্ডল যে ক’দিন তাদের হেফাজতে থাকবে ওই নিরপেক্ষ সাক্ষীকে দিয়েই তাঁর বয়ান লেখানো হবে এবং গোটা প্রক্রিয়ার ভিডিয়ো রেকর্ড করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thirteen − thirteen =