আসানসোল: গোরু পাচার (cow smuggling) মামলায় এফআইআর (FIR) এ থাকা কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মী, বিএসএফ কমান্ডেন্ট যদি ৩২ দিনের মাথায় জামিন পেতে পারেন তবে এফআইআরে নাম না থাকা সত্ত্বেও রাজ্য সরকারের পুলিশ কনস্টেবল সায়গল হোসেনকে ৩৯ দিনের মাথায় কেন জামিন দেওয়া হবে না? এই প্রশ্ন তুলে আসানসোল বিশেষ সিবিআই আদালতে স্পেশ্যাল শুনানি হল মঙ্গলবার। যদিও দু’পক্ষের আইনজীবীদের সওয়াল জবাব শুনে শেষ পর্যন্ত বিচারক জামিন নাকচ করে দেন অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের। গোরু পাচার মামলায় বীরভূমের জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের জামিন আবারও নাকচ হল। এদিন আসানসোল বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী তার জামিন নাকচ করেন। পরবর্তী শুনানির দিন নির্ধারিত হয়েছে আগামী ২২ জুলাই। এদিন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার তরফে আদালতে সায়গলের সম্পত্তি হিসাবে একটি পেট্রোল পাম্পের নথি জমা দেওয়া হয়। একই সঙ্গে এদিন আসানসোল সিবিআই আদালতে সায়গলের সার্ভিস বুক জমা করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
গত ৮ জুলাই শেষবার সায়গলকে সিবিআই আদালতে তোলা হয়েছিল। সেদিনই বিচারক তার জামিন নাকচ করে ১৪ দিন জেল হেপাজতের নির্দেশ দিয়ে পরবর্তী শুনানির দিন ২২ জুলাই হবে বলে জানিয়েছিলেন।
কিন্তু এদিন এই মামলায় এফআইআরে মূল অভিযুক্ত হিসাবে গ্রেফতার হওয়া বিএসএফের কমান্ডার সতীশ কুমারের ৩২ দিনের মাথায় জামিন পাওয়ায় প্রসঙ্গ তুলে, সায়গলের জামিনের আবেদন করেন তার আইনজীবী অনির্বাণ গুহ ঠাকুরতা। সায়গলের জেলে থাকার মেয়াদ মঙ্গলবার ৩৯ দিনে পড়ল।
উল্লেখ্য, সোমবার সায়গলের আইনজীবীর তরফে তার জামিনের আবেদন আদালতে করা হয়েছিল। সেই আবেদন মঞ্জুর করে এদিন বিচারক বিশেষ শুনানি হবে বলে জানিয়েছিলেন। সেই মতো বেলা বারোটার পরে শুনানি শুরু হতেই আইনজীবী অনির্বাণ গুহ ঠাকুরতা সওয়াল করে বলেন, এই মামলায় এফআইআর এ মূল অভিযুক্ত হিসাবে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন বিএসএফের কমান্ডার সতীশ কুমার। তিনি ৩২ দিনের মাথায় জামিন পেয়েছেন। সায়গল হোসেনের নাম এফআইআর এ না থাকা সত্ত্বেও, তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদিন তার সবমিলিয়ে হেপাজতে থাকার মেয়াদ ৩৯ দিন হল। তদন্তে আমার মক্কেল আগেও সবরকম সহযোগিতা করেছে, আগামী দিনেও করবে। তাই তাকে যে কোনও শর্তে জামিন দেওয়া হোক। এই জামিনের বিরোধিতা করে সিবিআইয়ের আইনজীবী রাকেশ কুমার এদিন সায়গলের পেট্রোল পাম্প সংক্রান্ত দুটি সম্পত্তির নথি ও সার্ভিস বুক জমা দেন। তিনি বলেন, তদন্ত এখনও চলছে আরও অনেক কিছু বেরবে। এই সময় জামিন পেলে তদন্তে সমস্যা হবে। তাই তাকে জামিন না দেওয়া হোক। সায়গলের আইনজীবীর উত্তরে বলেন, সম্পত্তির নথি তো পাওয়া যাচ্ছে সরকারি অফিস থেকে। তা আগেও পাওয়া গিয়েছে। সেক্ষেত্রে সায়গলের জামিন পাওয়া বা না পাওয়ার কি সম্পর্ক আছে? শেষ পর্যন্ত দু’পক্ষের আইনজীবীর সওয়াল-জবাব শেষে বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী সায়গলের জামিন নাকচ করে দেন।
মোট তিন দফায় সাতদিন করে ১৪ দিন সিবিআই হেপাজতে ও ১৪ দিন জেল হেপাজতের পরে গত ৮ জুলাই আসানসোলে বিশেষ সিবিআই আদালতে তোলা হয়েছিল সায়গল হোসেনকে।