ফের এক ঐতিহাসিক সাফল্য ইসরোর, সূর্যের পথে পাড়ি দিল আদিত্য এল ১

ফের এক ঐতিহাসিক সাফল্য ইসরোর। তৈরি হল আরও এক ইতিহাস। সকাল ১১টা ৫০ মিনিটে স্পেস সেন্টার থেকে সতীশ ধাওয়ান সসফল ভাবে সূর্যের পথে পাড়ি জমাল ইসরোর সূর্যযান আদিত্য-এল ১।

শনিবার ২ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টা ৫০ মিনিটে সফল ভাবে উৎক্ষেপণ করা হয় আদিত্য-এল১-কে। অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার লঞ্চিং প্যাড থেকে সূর্যের উদ্দেশে রওনা দেয় এই মহাকাশযান। এর আগে সকাল ১১টা ২০ মিনিট থেকে লাইভ স্ট্রিমিং সম্প্রচার শুরু করে ইসরো।

সূর্যের বায়ুমণ্ডল সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করার জন্য আদিত্য-এল১ উপগ্রহটিকে মহাকাশে পাঠানো হল। প্রায় সাড়ে ১০ লক্ষ কিলোমিটার ভ্রমণ করে গন্তব্যে পৌঁছবে এই মহাকাশযানটি। এই গন্তব্যে পৌঁছতে আদিত্যর সময় লাগবে মোটামুটি চার মাস। আদিত্য-এল১ হল সূর্যের দিকে পাঠানো প্রথম মহাকাশযান। সূর্যের অপর নাম আদিত্য। সেই কারণেই এই মহাকাশযানের নাম রাখা হয়েছে ‘আদিত্য’।

মহাকাশযানটিকে বহন করে নিয়ে গেল ভারতীয় রকেট ‘পোলার স্য়াটেলাইট লঞ্চ ভেহিকেল’ বা পিএসএলভি সি-৫৭। ইসরোর তরফে জানানো হয়েছে, মহাকাশযানটিকে সূর্য-পৃথিবীর হ্যালো কক্ষপথের ল্যাগরেঞ্জ পয়েন্ট বা এল-১ পয়েন্টে বসানো হবে।

উৎক্ষেপণের দিন থেকে শুরু করে ১৬ দিন পৃথিবীর চারপাশে ঘুরবে এই আদিত্য-এল ১। ১৬ দিনে সূর্যের দিকে রওনা দেওয়ার জন্য আদিত্য পাঁচটি ধাপে গতিবেগ বাড়াবে। ১১০ দিন পর সূর্যের অভিমুখে যাত্রা করবে। তারপর নির্দিষ্ট দূরত্বে দাঁড়িয়ে সূর্যকে পর্যবেক্ষণ করবে। ল্যাগরেঞ্জ পয়েন্টে সূর্য ও পৃথিবীর আকর্ষণ ও বিকর্ষণ বল একসঙ্গে ক্রিয়াশীল থাকে। ফলে এই অঞ্চলে স্য়াটেলাইটটি স্থির থেকে সূর্যকে অধ্যয়ন করতে পারবে। মহাকাশের পরিবেশ, আবহাওয়ায় সূর্যের কী প্রভাব পড়ে সেই সব তথ্য জানার চেষ্টা করবে সূর্যযান আদিত্য-এল১।

ইসরোর তরফ থেকে এও জানানো হয়েছে আদিত্য-এল ১ মিশনের জন্য খরচ হচ্ছে প্রায় ৩৭৮.৫৩ কোটি টাকা। উৎক্ষেপণ সফল হয়েছে। এবার সমগ্র মিশটি সফল হলে সৌরঝড়ের পূর্বাভাস দিতে সক্ষম হবে ইসরো। সূর্যের আবহাওয়ার পরিবর্তনের প্রভাবও বুঝতে সাহায্য করবে আদিত্য-এল১। এই মিশনের মাধ্যমে অনেক অজানা তথ্য সামনে আসবে বলে মনে করছে বিজ্ঞানী মহল। সঙ্গে এও জানানো হয়েছে, আদিত্য-এল ১ যানটিতে মোট সাতটি পেলোড থাকবে। এগুলি সূর্যের বিভিন্ন স্তর পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য তৈরি করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, দিনরাত এক করে বিগত কয়েক বছর ধরেই এই মহাকাশ অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন বিজ্ঞানীরা। ইসরোর সূর্যযান উৎক্ষেপণের একবারে সামনে থেকে বসে দেখার সুযোগ পেয়েছে পঞ্জাবের একটি সরকারি স্কুলের ২৩ পড়ুয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ten − 9 =