অ্যাম্বুল্যান্স না পেয়ে টোটোতে করে হাসপাতাল আসার পথে টোটোতেই কন্যা সন্তান প্রসব করলেন এক প্রসূতি মহিলা। ঘটনায় তুমুল উত্তেজনা এলাকাজুড়ে। রবিবার ভোরে চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর দিনাজপুর জেলার হেমতাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত দেউচি এলাকার কোড়াপাড়া গ্রামে। ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার দুপুরে হেমতাবাদ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভে নামল স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রবিবার ভোর ৩টে নাগাদ হেমতাবাদ গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত দেউচি এলাকার কোড়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা প্রশান্ত কোড়ার স্ত্রী কলাবতী নাগবংশীর প্রসব যন্ত্রণা ওঠে। বহুবার ১০২ নম্বরে অ্যাম্বুল্যান্সের জন্য ফোন করা হলেও অ্যাম্বুল্যান্স পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ।
পরিবার সূত্রে আরও জানা গেছে, ১০২ অ্যাম্বুল্যান্সে ফোন করা হলে কুয়াশার কারণে রাস্তা চিনতে পারছে না তাই যেতে পারবে না বলে সাফ জানানো হয়েছে বলে দাবি পরিবারের। বাধ্য হয়েই টোটোতে করে সেই প্রসূতিকে হাসপাতালের দিকে রওনা হয় পরিবারের লোকেরা। সেই সময় মাঝরাস্তায় টোটোতেই সন্তান প্রসব করে কলাবতী নাগবংশী নামে সেই প্রসূতি। পরবর্তী সময়ে তাকে এবং সদ্যোজাত শিশু কন্যাকে হেমতাবাদ ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। এই ঘটনা জানাজানি হতেই তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হয় এলাকা জুড়ে। এই ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার আন্দোলনে নামে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। হেমতাবাদ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের সামনে অবস্থান-বিক্ষোভে সামিল হয় বিজেপির নেতা-কর্মীরা। ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে হেমতাবাদ স্বাস্থ্য কেন্দ্র চত্বরে। ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে হেমতাবাদ থানার পুলিশ।
প্রসূতির স্বামী প্রশান্ত কোড়া জানিয়েছেন, রবিবার ভোরবেলা তার স্ত্রীর প্রসব যন্ত্রণা ওঠায় বার বার ১০২ নম্বরে ফোন করা হলেও অ্যাম্বুল্যান্স পাওয়া যায়নি। এই ঘটনার প্রতিবাদে আন্দোলনরত হেমতাবাদের মণ্ডল সভাপতি বিপ্লব সরকার বলেন, হেমতাবাদের বিএমওএইচ নোটিস করে অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা বন্ধ রেখেছে। ফলে একজন প্রসূতি অ্যাম্বুল্যান্সে না আসতে পেরে টোটোতেই সন্তান প্রসব করেছে। এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। কেন জরুরি পরিষেবা বন্ধ থাকল এবং কেন এই ঘটনা ঘটল তার জবাব চাই। হেমতাবাদের বিএমওএইচ আনসারুল হক জানিয়েছেন, ১০২ অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা চালু আছে। গত ১ ডিসেম্বর রাজ্যব্যাপী মাতৃযান পরিষেবা বন্ধ ছিল। পরবর্তীতে আমরা নোটিস পাই এবং মাতৃযান পরিষেবাও চালু হয়ে যায়। আমরা তা মিটিং ডেকে সকলকে জানিয়ে দিয়েছি।তবে এই বিষয়টি জানলাম। পুরো ঘটনাটি খতিয়ে দেখছি। কারও গাফিলতি থাকলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।