বন্দিদের মধ্যে প্রভাব বিস্তার রুখতেই অসমে নিয়ে যাওয়া হয়েছে অমৃতপালকে

শুধু নিরাপত্তাই নয়, অমৃতপাল যাতে প্রভাব বিস্তার করতে না পারেন তার জন্যই নিয়ে যাওয়া হল অসমে। রবিবারই পঞ্জাবের মোগা জেলায় গ্রেপ্তার হন খালিস্তানি নেতা অমৃতপাল সিং। এই গ্রেপ্তারির পর পঞ্জাব পুলিশ দ্রুত অমৃতপালকে নিয়ে যায় ভাতিন্ডা এয়ারবেসে। সেখান থেকে বিশেষ কপ্টারে করে সোজা নিয়ে যাওয়া হয় অসমে। সূত্রে খবর, ডিব্রুগড় জেলেই ঠাঁই হয়েছে খালিস্তানি নেতার। এদিকে ওই জেলেই আগে থেকে বন্দি রয়েছেন অমৃতপালের আট সঙ্গী। কিন্তু কেন হঠাৎ অসমে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে পঞ্জাবের হাই প্রোফাইল বন্দিদের তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। প্রশ্ন উঠছে, এর পিছনে রয়েছে শুধুই নিরাপত্তা জনিত ঘটনা, না রয়েছে আরও অন্য বড় কোনও কারণ।
সূত্রে যে খবর মিলছে তাতে, ডিব্রুগড় জেল উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্য়তম সুরক্ষিত ও বড় জেল। ১৭০ বছর পুরনো ডিব্রুগড় জেলে এখনও অবধি জেল ভেঙে পালানোর মতো বড়সড় ঘটনা কখনও ঘটেনি। এই জেলের নিরাপত্তা অত্য়ন্ত কঠোর, পাশাপাশি শহরের একদম কেন্দ্রস্থলে জেলের অবস্থান হওয়ায় জেল ভেঙে বন্দি নিয়ে পালানোও প্রায় অসম্ভব। ‘ওয়ারিস পঞ্জাব দে’ সংগঠনের প্রধান অমৃতপালের গ্রেপ্তারির ঘিরে যাতে কোনও প্রকার বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়, তার জন্য়ই তাঁকে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা সহ ডিব্রুগড়ের জেলে রাখা হয়েছে।
বাকি বন্দি, বিশেষ করে নিজের সহকারীদের সঙ্গে যাতে কথা বলতে না পারেন অমৃতপাল, তার জন্য আলাদাভাবে আইসোলেশন সেলে রাখা হয়েছে অমৃতপালকে। তাঁর সেলে বসানো হয়েছে সিসিটিভিও। এছাড়া গোটা জেল জুড়ে মোট ৫৭টি সিসিটিভি রয়েছে।
তবে সূত্র বলছে শুধুমাত্র অমৃতপালের নিরাপত্তা নয়, তাঁকে উত্তর-পূর্বের জেলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে আরও নানা কারণে। উত্তর-পূর্ব ভারতের জেলগুলিতে বন্দি গ্য়াংস্টার ও বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে খালিস্তানি নেতা অমৃতপাল সিংয়ের যোগ থাকার প্রবল সম্ভাবনা। তদন্তে যাতে সুবিধা হয়, তার জন্যই অমৃতপালকে পঞ্জাব থেকে সরাসরি অসমের জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। পাশাপাশি এও জানা গিয়েছে, ভাষার প্রতিবন্ধকতাকেও হাতিয়ার করছে পুলিশ। পঞ্জাবের কোনও জেলে থাকলে অন্যান্য বন্দি বা জেল আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলতে কোনও অসুবিধা হত না অমৃতপালের। কথা বলার সুযোগ পেলেই অমৃতপাল ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে তাঁদের মনে নিজের মতবাদকে প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা চালেতেন। এই আশঙ্কা থেকেই উত্তর ভারতের জেলে রাখার সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটে পঞ্জাব পুলিশ। এদিক থেকে অমৃতপালকে ডিব্রুগড়ের জেলে রাখা হলে তাঁর অন্যান্য বন্দিদের সঙ্গে কথা বলতে অসুবিধা হবে ভাষাগত সমস্যা থাকায়। এদিকে এ খবরও মিলছে,অসমের শিখ সম্প্রদায়ও খালিস্তানের সমর্থক নন, ফলে বিশেষ সুবিধা করতে পারবেন না অমৃতপাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × five =