গ্রেপ্তার করা হয়েছে অমৃতপাল সিংকে, জানালেন পঞ্জাবের আইজি

আত্মসমর্পণ করেননি খালিস্তানপন্থী নেতা তথা স্বঘোষিত শিখ ধর্মগুরু অমৃতপাল সিং, অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাঁকে।‘ওয়ারিস পঞ্জাব দে’ সংগঠনের প্রধানকে নিজেদের জালে তোলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এমনটাই দাবি পঞ্জাব পুলিশের। পাশাপাশি এও জানানো হয়, রবিবার৬টা ৪৫ মিনিট নাগাদ গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে। কারণ, রবিবার সকালেই খালিস্তানপন্থী নেতা অমৃতপাল সিং আত্মসমর্পণ করেছে বলে খবর রটে। তবে এর কিছু পরেই রীতিমতো সাংবাদিক বৈঠক করে বিষয়টি স্পষ্ট করা হয় পঞ্জাব পুলিশের তরফ থেকে।
এদিন পঞ্জাব পুলিশের আইজি (সদর) সুখচেইন সিং গিল জানান, ‘অমৃতপালের ওপর বিপুল চাপ তৈরি করেছিল পুলিশ। এরপর তার সামনে ধরা দেওয়া ছাড়া আর অন্য কোনও রাস্তা খোলা ছিল না।‘
একইসঙ্গে পঞ্জাব পুলিশের তরফ থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে পঞ্জাব পুলিশের আইজি এও জানান, ‘মোগা জেলার রদে গ্রামে অমৃতপাল লুকিয়ে আছেন বলে তাঁদের কাছে সূত্র মারফৎ খবর আসে। এরপরই তাঁকে কী ক্ষাবে নিজেদের জালে তোলা হবে তার সমস্ত রকম পরিকল্পনা তৈরি হয় পঞ্জাব পুলিশের তরফ থেকে। এরপরই পরিকল্পনামাফিক অমৃতসর গ্রামীণ পুলিশকে নিয়ে ওই এলাকায় হানা দেন পঞ্জাব পুলিশের গোয়েন্দারা। ওই সময় স্থানীয় একটি গুরুদ্বারে ছিল অমৃতপাল। পুলিশ ধর্মস্থলে প্রবেশ করেনি। গুরুদ্বার থেকে বের হতেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।’
তবে গ্রেপ্তার করার পরই দ্রুত অমৃতপালকে নিয়ে যাওয়া হয় অসমের ডিব্রুগড় সেন্ট্রাল জেলে। আর এই ডিব্রুগড় জেলেই বিচারাধীন বন্দি হিসেবে রয়েছেন অমৃতপালের আট সহযোগী। প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই জাতীয় নিরাপত্তা আইনের ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
এদিকে সূত্রে খবর, এদিন গ্রেপ্তারির আগে গুরুদ্বারে প্রার্থনায় অংশ নেয় অমৃতপাল। সেখানে কিছুক্ষণ ভাষণও দেন অমৃতপাল। সেই ছবি ছড়িয়েও পড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তবে গ্রেপ্তারির আগে তাঁর শেষ বক্তব্যে খালিস্তানপন্থী নেতা উস্কানিমূলক কিছু বলেছে কিনা তা স্পষ্ট নয়।
চলতি বছরের ১৮ মার্চ অমৃতপালকে পলাতক বলে ঘোষণা করে পঞ্জাব পুলিশ। এর পর থেকে একাধিক পড়শি রাজ্যে পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন এই অমৃতপাল। অবশেষে ৩৭ দিনের মাথায় খালিস্তানি নেতাকে নিজেদের জালে তুলতে পারল পঞ্জাব পুলিশ।
প্রসঙ্গত, নিজেকে খালিস্তানি নেতা জার্নেল সিং ভিন্দ্রানওয়ালের ‘দ্বিতীয় সংস্করণ’ বলে উল্লেখ করতেন এই অমৃতপাল। গত শতাব্দীর আটের দশকে জার্নেল সিং-ই পঞ্জাবে খালিস্তান আন্দোলনে নেতৃত্বে দিয়েছিলেন। এরপর ১৯৮৪-তে তার বিরুদ্ধে সেনা অভিযানের নির্দেশ দেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি। সেনার সঙ্গে গুলির লড়াইতে মৃত্যু হয় জার্নেল সিংয়ের। গোটা অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘অপারেশন ব্লু স্টার।‘ আর এই সেনা অভিযান চালানো হয়েছিল অমৃতসরের স্বর্ণ মন্দিরে।
এখানে বলে রাখা শ্রেয়, খালিস্তানি নেতা জার্নেল সিং ছিলেন রদে গ্রামের বাসিন্দা। রবিবার ভিন্দ্রেনওয়ালের এই গ্রাম থেকেই ‘ওয়ারিস পঞ্জাব দে’ সংগঠনের প্রধানকে গ্রেপ্তার করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × 5 =