জামিন হল না গার্ডেনরিচ ঘটনায় ধৃত আমির খানের

জামিন হল না গার্ডেনরিচের ঘটনায় ধৃত আমির খানের। গার্ডেনরিচে খাটের নিচ থেকে উদ্ধার হয়েছিল রাশি রাশি টাকার বাণ্ডিল। এই ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছিল কলকাতাবাসী সহ গোটা রাজ্যকে। পরে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অপরাধে গাজিয়াবাদ থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ব্যবসায়ী আমির খানকে। এই আমিরই শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে জামিনের জন্য আবেদন করেন। তবে তাতে কর্ণপাত করেনি কলকাতা হাইকোর্টে বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চ। আমিরেরজামিনের আবেদন খারিজ করে দেয়।
উল্লেখ্য, গত বছর শাহি আস্তাবল গলিতে ব্যবসায়ী নাসির খানের বাড়িতে অভিযান চালায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টেরেটের আধিকারিকেরা। সেখানে একটি ঘরে খাটের তলা থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হয়-অংকটা ১৭ কোটির বেশি। এই ঘটনায় উঠে আসে আমির খানের নাম। এই বিপুল অর্থের উৎস কী তা জানার জন্য তদন্তে নামেন ইডি-র আধিকারিকেরা। তবে তখন আমির খানের কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। এদিকে স্থানীয় সূত্র মারফৎ ইডি-র আধিকারেকরা জানতে পারেন, আমিরের পরিবার বরাবর মধ্যবিত্ত হিসেবেই পরিচিত ছিল। কিন্তু, আমির খানের পোশাক থেকে শুরু করে জীবনযাত্রায় আমূল পরিবর্তন নজরে আসে সবার। এর পিছনে যে আর্থিক এই প্রতারণার ঘটনা রয়েছে সে সম্পর্কে নিশ্চিত হন ইডি-র আধিকারিকেরা।পরবর্তীতে তাঁকে গাজিয়াবাদ থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এনফোর্সমেন্ট ডিপার্টমেন্ট সূত্রে খবর, তাতে আমিরের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তাতে মূলত উঠে এসেছে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ। পাশাপাশি এও জানানো হয় যে, গার্ডেনরিচের শাহি আস্তাবল গলিতে তাঁর বসবাস ছিল। পেশাগত জীবনের শুরু একটি কল সেন্টারে কর্মী হিসেবেই। এরপর হঠাৎ-ই ব্যবসায়ী হিসেবে উলকা উত্থান হয় তাঁর। আর এর পিছনে ভূমিকা রয়েছে ই-নাগেটস গেমিং অ্যাপের। এই অ্যাপ ব্যবহার করেই আর্থিক প্রতারণা চালাতেন আমির। এরপর আর্থিক ভাবে ফুলে ফেঁপে ওঠেন। তিনি, এমনটাই মনে করছেন এনফোর্সমেন্ট ডিপার্টমেন্টের আধিকারিকেরা। এই ই-নাগেটস অ্যাপ দিয়ে প্রতারণা শুরু হয় ২০১৫ সাল থেকে। এরপর লকডাউনের সময় তা ফুলে ফেঁপে ওঠে । কারণ, লকডাউনের সময় সাধারণ মানুষের অবসর এবং আর্থিক প্রয়োজনীয়তার সুযোগ নিয়েছিল আমির, উঠে আসে এমনই তথ্য। টাকা বিনিয়োগ করে বড় অর্থ জয়ের জন্য প্রলোভন দেখানো হত এই গেমিং অ্যাপের মাধ্যমে। আর এতেই সর্বস্ব হারান অনেকেই। কারণ এই অ্যাপের মাধ্যমে প্রথমে মোটা অংকের টাকা জেতানোর লোভ দেখানো হত গ্রাহকদের। বলা হতো তাঁদের টাকা ঢালার জন্য। আর বিনিয়োগ করা টাকাই ঘুরপথে ঢুকত আমিরের পকেটে, এমনটাই মনে করছিলেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি এই অনলাইন গেমিং-কাণ্ডের তদন্তে নেমে উঠে এসেছিল বিটকয়েন প্রসঙ্গও। ফলে এখন এনফোর্সমেন্ট ডিপার্চমেন্টের আধিকারিকদের একটাই লক্ষ্য, কীভাবে এই গেমিং অ্যাপ কাজ করত বা আর্থিক প্রতারণায় তাঁর ঠিক কী যোগাযোগ ছিল তা খতিয়ে দেখা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

14 + thirteen =