নিউইয়র্ক: গত সপ্তাহে আছড়ে পড়া তুষারঝড় বম্ব সাইক্লোনে বিধ্বস্ত আমেরিকার একাধিক জায়গা। মৃতের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। অন্তত ৫৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। খোঁজ মেলেনি বহু মানুষের। এখনও অনেকেই আটকে রয়েছেন বিভিন্ন জায়গায়।যার জেরে মৃতের সংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে বৃহস্পতিবার থেকেই ঝড়ে বিধ্বস্ত নিউ ইয়র্কের বাফেলোর রাস্তাগুলি গাড়ি চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে।
সাংবাদিক সম্মেলনে নিউ ইয়র্কের দ্বিতীয় জনবহুল শহরের মেয়র বলেন, ”বরফ সরানোর কাজে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। ইতিমধ্যেই শহরতলির বহু রাস্তা, গুরুত্বপূর্ণ হাইওয়ে এবং নায়াগ্রা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর খুলে দেওয়া হয়েছে।” বড়দিনের আগেই তুষারঝড়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে আমেরিকা ও কানাডার বিস্তীর্ণ এলাকা। বেশ কয়েকদিন কেটে গেলেও বরফের নীচে রয়েছে একাধিক অঞ্চল। প্রতিদিন তুষারপাতের ফলে ঘণ্টায় দুই থেকে তিন ইঞ্চি বেড়ে যাচ্ছে জমে থাকা বরফের পরিমাণ। বাফেলোর গভর্নর কেথি হোচুল বলেছেন, “পুরো এলাকা এখন যুদ্ধক্ষেত্রের মতো হয়ে গিয়েছে।”ঝড়ের কারণে বিদ্যুৎ পরিষেবা পাচ্ছেন না ১৮ লক্ষ মানুষ। প্রায় দেড় লক্ষ বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। শোচনীয় অবস্থা কানাডাতেও। এক লক্ষের বেশি বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই। ঝড়ের পরে রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি ও তুষারপাত হয়েছে আমেরিকায়। হিমাঙ্কের ৪৩ ডিগ্রি নীচে নামতে পারে দেশের তাপমাত্রা, এমনটাই অনুমান স্থানীয় আবহবিদদের।সব মিলিয়ে ১৯৭৭ সালের ঐতিহাসিক তুষারঝড়ের পর এমন বিপর্যয় আর দেখা যায়নি বলেই মত আবহাওয়াবিদদের। তবুও এই পরিস্থিতির মোকাবিলায় সম্ভাব্য সব রকম প্রতিরোধ গড়ে তোলা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন মেয়র।
একদিকে যখন তুষার ঝড়ের ভয়াবহতা কাটিয়ে ছন্দে ফেরার চেষ্টা চালাচ্ছে আমেরিকা, তখন সোশ্যাল মাধ্যমে ভাইরাল বাফেলো শহরে এক দম্পতির মানবিক ছবিও। প্রবল ঠান্ডায় আঙুল পচতে শুরু করেছিল অসুস্থ এক বৃদ্ধের। ‘বম্ব সাইক্লোনে’ জেরে ফ্রস্টবাইট নিয়ে কাতরাচ্ছিলেন মানসিক সমস্যাগ্রস্ত বৃদ্ধ। দুর্যোগ উপেক্ষা করে সেই বৃদ্ধকে উদ্ধার করে, নিজেদের ঘরে ঠাঁইও দেন দম্পতি। বৃদ্ধের সেবাশ্রূশুষা করে তাঁকে হাসপাতালেও নিয়ে যান।সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, বাফেলোর ওই বৃদ্ধের নাম জোয়ি হোয়াইট। জোয়ি গত কয়েক দিনের প্রবল তুষারঝড়ে আটকে প়ড়েছিলেন। তাঁর দেহে দেখা দিয়েছিল তুষারক্ষতও। ওই অবস্থায় সাহায্যের জন্য চিৎকার করছিলেন।সেই সময় এগিয়ে আসেন ওই দম্পতি শা’কায়রা অহট্রি ও ট্রেন্ট।