কাজ শুরু হয়েও এখন থমকে দাঁড়িয়ে সাঁতরাগাছি দক্ষিণ পূর্ব রেল স্টেশনের আধুনিকীকরণ

বর্তমান সময়ের বিমানবন্দরের আদলে অত্যাধুনিক রেল স্টেশন করার কথা ছিল হাওড়ার সাঁতরাগাছিতে দক্ষিণ পূর্ব রেলের গুরুত্বপূর্ণ এই স্টেশনটি। যদিও সেই কাজ শুরু হওয়ার চার বছর হতে চললেও তার কাজ এখনও শেষ হয়নি। আর এই অসমাপ্ত নির্মীয়মান এই স্টেশনটিকে সময়ের সঙ্গে সহেগ দেখে মনে হয় ভূতের বাড়ি। দক্ষিণ পূর্ব রেলের তরফ থেকে ২০১৯ সালে এই স্টেশন ঢেলে সাজানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা জানান হয়। সেই মতো ভারতীয় রেলের তরফে অর্থও বরাদ্দ করা হয়। তবে কাজ শুরু হওয়ার দুই বছরের মধ্যেই সেই কাজে স্থিমিত হতে শুরু করে। যার জেরে এখন এই অর্ধসমাপ্ত বাড়িতে ভর্তি হয়েছে আগাছা আর জং ধরা মেশিন। এভাবেই হতশ্রী অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে নব কলেবরের প্রতিশ্রুতি প্রাপ্ত সাঁতরাগাছি রেল স্টেশন। কোনা এক্সপ্রেসওয়ের ধারের সাঁতরাগাছি স্টেশন এখন এলাকাবাসীদের কাছে পোড়ো বাড়ি নামেই উদ্ধৃত। যদিও বিষয় প্রসঙ্গে দক্ষিণ পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কে এস আনন্দ জানিয়েছেন যে, কোভিড পরিস্থিতির জন্যে কাজের গতি কমেছে। যদিও করোনা পরবর্তী সময়ে ফের ধীরে ধীরে সেই কাজ চালু করা হচ্ছে। চলতি আর্থিক বর্ষের বাজেটে এই প্রকল্পের জন্যে মঞ্জুর করা হয়েছে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা। পাশাপাশি ভারতীয় রেল বোর্ডের তরফ থেকেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে যে কাজ চলতে থাকলে অর্থের যোগান বন্ধ হবে না। এদিকে আরও জানা গিয়েছে যে, করোনা পরিস্থিতিতে রেলের ভাঁড়ার প্রায় শূন্য। স্বাভাবিকভাবেই, বর্তমানে যে সব প্রকল্পের খুব একটা প্রয়োজন নেই সেই গুলির কাজ থমকে গিয়েছে। যদিও, এই বিল্ডিংয়ের কাজ সমাপ্ত হয়ে গেলে তা ব্যবসায়ীদের দেওয়ার কথা ছিল স্টেশনে রিটেল আউটলেটের জন্য। কিন্তু, মহামারির আবহে সেদিকেও আগ্রহ প্রকাশ করছেন না অনেকেই। ফলে আটকে যাচ্ছে নতুন স্টেশন ভবনের মানোন্নয়নের কাজ। যদিও প্রকল্পের কাজ কবে শেষ হবে তা স্পষ্টভাবে বলতে পারছেন না কেউ। এখন প্রকল্পটির কাজে ব্যবহৃত মেশিন এবং যন্ত্রাংশ সমগ্র এলাকা জুড়ে পড়ে রয়েছে। এদিকে, হাওড়া স্টেশনের বিকল্প হিসাবে যে সাঁতরাগাছি স্টেশনের কাজ শুরু হয়েছিল, তার গতি হঠাৎ হারিয়ে যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই একাধিক প্রশ্ন উঠছে। যদিও দক্ষিণ পূর্ব রেলের তরফে জানানো হয়েছে যে, ধীরে ধীরে এর কাজ শেষ করা হবে। প্রসঙ্গত, দক্ষিণ পূর্ব রেলের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন হল সাঁতরাগাছি। রেলের পরিকল্পনা ছিল যে কোনো বিমানবন্দরের ধাঁচে যাত্রীদের নিয়ে গাড়ি এসে থামবে স্টেশনের উপরে। সেখানে যাত্রীদের নামিয়ে গাড়ি সোজাসুজি চলে যাবে কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে। সেই কারণে রাস্তার পাশে চলছিল ব্রিজ তৈরির কাজও। সূত্রের খবর এই কাজের বরাত পাওয়া সংস্থাটি ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছিল তারাও আপাতত কাজ স্থগিত রেখেছে। এছাড়াও, যে বহুতল টার্মিনাল তৈরির কাজ শুরু হয়েছিল তাও থমকে গিয়েছে। রেলের অভ্যান্তরে সূত্রের খবর বলছে, করোনা পরিস্থিতিতে রেলের আর্থিক টানাটানি চলছে। স্বাভাবিকভাবেই, বর্তমানে যে সব প্রকল্পের খুব একটা প্রয়োজন নেই সেই গুলির কাজ থমকে রয়েছে। তবে এই বিল্ডিংয়ের কাজ সমাপ্ত হয়ে গেলে তা ব্যবসায়ীদের দেওয়ার কথা ছিল স্টেশনে খুচরো বিকিকিনির জন্য। যদিও মহামারির আবহে সেদিকেও আগ্রহ প্রকাশ করছেন না অনেকেই। ফলে আটকে যাচ্ছে নতুন স্টেশন ভবনের মানোন্নয়নের কাজ। আগামীদিনে এই স্টেশনকে হাওড়ার বিকল্প স্টেশন হিসেবে গড়ে তোলার যে ভাবনা নিয়েছে ভারতীয় রেল। তার কাজ এখন আরো কতদিন লাগবে তার দিকেই তাকিয়ে আছে সকলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 − one =