নিজস্ব প্রতিবেদন, বুদবুদ: বালিঘাট, বৈধ লাইসেন্স, বৈধ চালান না থাকা সত্ত্বেও প্রশাসনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রীতিমতো অবাধে বুদবুদের রণডিহা ড্যামের কাছেই বালি লুঠের কারবার চলছে বলে অভিযোগ। স্থানীয়দের কাছে অভিযোগ পাওয়ার পরই সংবাদ মাধ্যমের কর্মীরা সেখানে গিয়ে ছবি তুলতেই। ক্যামেরা দেখে রীতিমতো মুখ ঢেকে দামোদর নদের মাঝেই ট্রাক্টরের লোড করা বালি খালি করে ট্রাক্টর নিয়ে পালিয়ে যান চালকরা। অন্যদিকে ক্যামেরা দেখেই যে সমস্ত শ্রমিকরা কোদাল বেলচা নিয়ে ট্রাক্টরে বালি তোলার কাজ করছিলেন, তাঁরাও দ্রুত এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান বলে দাবি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এলাকার বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা এই পাচারের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। যার কারণে প্রশাসন কোনও নজরদারি চালায় না ওই এলাকায়। তাঁদের দাবি, দামোদর নদের যেখান থেকে বালি তোলা হচ্ছে, বর্ষার সময় নদের গতিপথ পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এলাকারই প্রায় ১৫ জন ট্রাক্টরের মালিক এই অবৈধ বালি পাচারে কারবার চালাচ্ছেন।
এই বিষয়ে রণডিহা ও চাকতেঁতুল এলাকার বিজেপি নেতাদের প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে, তাঁরা এই বিষয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি। এমনকি স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বকে এই বিষয়ে ফোন করা হলে তাঁরা এই ঘটনার কথা জানেনই না বলে দাবি করেছেন। অন্যদিকে চাকতেঁতুল গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অনুপ কুমার মেটেকে ফোন করা হলে তিনি ফোনে প্রথমেই বিষয়টি জানেন না বলে দাবি করেন। পরে তা¥কে উপযুক্ত প্রমাণ থাকার কথা বলা হলে তিনি জানান, যেহেতু দামোদর নদ বাঁকুড়া জেলায় পড়ে তাই তিনি এই বিষয়ে কিছু জানেন না এবং এই বিষয়ে কিছু বলতেও পারবেন না।
প্রশ্ন উঠেছে, বালি যদি বাঁকুড়া জেলায় তোলা হয় সেই অবৈধ বালি যখন বুদবুদের রণডিহা,চাকতেঁতুল হয়ে বিভিন্ন এলাকায় যাচ্ছে তখন পঞ্চায়েত বা প্রশাসন এই বিষয়ে কেন কোনও নজরদারি করে না। সকলের মুখে কুলুপ আঁটার ফলে প্রশ্ন উঠছে তবে কি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মদতেই অবাধে চলছে এই বালির পাচারের কারবার। এলাকা সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় বাসিন্দা জয়রাম ঘোষ, সৌরভ ঘোষ (রাজা), দিলীপ ঘোষ সহ একাধিক ব্যক্তি এই বালি পাচারের সঙ্গে যুক্ত বলে দাবি। এর মধ্যে দিলীপ ঘোষ ফোনে সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, পুলিশকে তাঁরা রীতিমত টাকা দিয়েই এই বালি কারবার চালাচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে পুলিশের মদতেই কি বালি কারবারিদের এত বাড়বাড়ন্ত!