নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঁকুড়া: আছে সরকারের দ্বারা নিয়োগপ্রাপ্ত চিকিৎসক, কিন্তু স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়মিত তাঁর দেখা মেলে না বলেই অভিযোগ। আরও অভিযোগ, তাঁর জায়গায় গ্রামগঞ্জ থেকে আগত রোগীদের রীতিমতো প্রেসক্রিপশন করে ওষুধ দিচ্ছেন কর্তব্যরত জি.এন.এম নার্স এবং গ্রুপ সি কর্মী। প্রশ্ন উঠছে, স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশিকা অনুযায়ী, এই কাজ কি করতে পারেন একজন গ্রুপ সি কর্মী এবং নার্স?
এলাকাবাসীদের দাবি, দীর্ঘদিন খুব ভালোভাবে বেশ কয়েকটি গ্রামের লোক চিকিৎসা পরিষেবা পেত এই গ্রামীণ হাসপাতাল থেকে। সেই সময় শল্য চিকিৎসা থেকে শুরু করে, শিশুর জন্ম সবকিছুই হত এই গ্রামীণ হাসপাতালে। কিন্তু আজ সেসব অতীত, এখন গ্রামীণ হাসপাতাল পরিণত হয়েছে শুধুমাত্র একটা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। মৈঠ্যা, কদালা, নিকুঞ্জপুর, গামিদ্যা সহ একাধিক গ্রামের একমাত্র লাইফ লাইন এই স্বাস্থ্যকেন্দ্র। বাঁকুড়ার এই প্রান্তিক গ্রাম থেকে মেডিক্যাল কলেজের দূরত্ব প্রায় ৩০-৪০ কিলোমিটার।
তাঁদের অভিযোগ, বর্তমানে এই গ্রামে সরকারি চিকিৎসক থাকলেও, নিয়মিত তাঁর দেখা মেলে না স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। কোনও রোগী যদি জরুরিকালীন চিকিৎসা পরিষেবার জন্য এখানে আসেন, তাঁদেরকে ওষুধপত্র প্রদান করেন এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্তব্যরত নার্স বুলা হাজরা। এমনই চলে আসছে আজ কয়েক বছর ধরে ক্ষোভ উগরে দিলেন গ্রামবাসীরা। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী, যেখানে সকাল ৯টা থেকে ২টো অবধি চিকিৎসকের থাকার নিয়ম, সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে সকাল ১১টা বেজে গেলেও দেখা মিলল না চিকিৎসকের।
গ্রামবাসীরা দাবি করেন, দৈবক্রমে কোনও দিন চিকিৎসক এলেও এক ঘণ্টার বেশি তাঁকে পাওয়া যায় না এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। দীর্ঘদিন ধরে একই ঘটনা চলে আসায় অবশেষে এদিন তাঁরা সমবেত হয়ে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকেন। এমনকি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা। আরও দাবি, সংবাদমাধ্যম স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসার খবর পেয়ে, তড়িঘড়ি বাঁকুড়া শহর থেকে রওনা দেন ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্তব্যরত চিকিৎসক গৌতম মণ্ডল। বেশ কয়েক ঘণ্টা পর চিকিৎসক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসে পৌঁছলে গ্রামবাসীরা তাঁকে ঘিরে ধরে রীতিমতো বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। তবে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মরত চিকিৎসকের দাবি, তাঁর গাড়ি খারাপ হয়ে যাওয়ায় তাঁর আসতে দেরি হয়েছে। কর্তব্যরত ওই জি.এন.এম নার্স বুলা হাজরা এ বিষয়ে বলতেই পারবেন না বলে এড়িয়ে যান।