মালদার পুলিশকর্তার জমি জবর দখলের অভিযোগ

মালদা: জীবনের শেষ সঞ্চয়টুকু তিল তিল করে জমিয়ে কয়েক লক্ষ টাকা দিয়ে তিন কাঠা জমি কিনেছিলেন পুরাতন মালদার এক পুলিশ কর্তা। কিন্তু সেই পুলিশকর্তার জায়গা জবর দখলের অভিযোগ উঠেছে জমি মাফিয়াদের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে পুরাতন মালদা থানার মঙ্গলবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই রতনচন্দ্র মণ্ডল তাঁর জমি দখলের বিষয় নিয়ে ইংরেজবাজার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। কিন্তু এখনো পর্যন্ত সেই পুলিশ আধিকারিকের জমি উদ্ধার অথবা প্রয়োজনীয় কোনও উদ্যোগ নিতে দেখা যায়নি সংশ্লিষ্ট থানার অফিসারদের। অবশেষে আদালতে দ্বারস্থ হওয়ার পাশাপাশি ওই পুলিশ কর্তা এখন সপরিবারে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার কথা জানিয়েছেন।
এদিকে রাতারাতি যদি একজন পুলিশকর্তার জমি দখল করে নেয় মাফিয়ারা। তাহলে সাধারণ মানুষের কি অবস্থা। এ নিয়েও বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পুরাতন মালদা থানার মঙ্গলবাড়ি পুলিশ ফাঁড়িতে জেলা পুলিশের এএসআই পদে কর্মরত রতনচন্দ্র মণ্ডল। তাঁর অভিযোগ, প্রায় দশ বছর আগে মালদা শহরের চন্দন পার্ক এলাকায় রাজ্য সড়কের পাশে তিন কাঠা জমি কিনেছিলেন তিনি। যার দলিল নম্বর ৫৮৯৭। পরবর্তীতে ইংরেজবাজার থানার উত্তর রামচন্দ্রপুর মৌজার (খতিয়ান নম্বর-১৭৩, জে এল নম্বর-৭১, দাগ নম্বর-৫১৯) সেই জমিটি পশ্চিমবঙ্গ ভূমি সংস্কার আইন অনুযায়ী তাঁর নামে রেকর্ড করান।
পরবর্তীতে এই জমি তিনি ভোগ দখল করে আসছিলেন এবং তাঁর নামেই খাজনা দিয়ে আসছেন। কিন্তু রহস্যজনকভাবে সংশ্লিষ্ট এলাকার কিছু জমি মাফিয়ারা সম্প্রতি ওই পুলিশকর্তার জমির অংশটি পুরোপুরি দখল করে অনেকটাই সীমানা পাঁচিল তুলে দেয়। এমনকী, জমি মাফিয়ারা দাবি করতে থাকে সেই জমি নাকি তারাই কিনেছে।
পুলিশ কর্তা রতনচন্দ্র মণ্ডলের বক্তব্য, আমার জমি অদ্ভুতভাবে অন্যের নামে দলিল হয়ে গেল কি করে? তারা দখলই করল বা কি হিসাবে, কিছুই বুঝতে পারছি না। বরঞ্চ দখলদারদের আমার জমি থেকে সরতে বললে ওরা আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। আর আমি একজন পুলিশকর্তা হিসেবে সেই হুমকির জেরে পরিবার নিয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছি। কি করব কিছুই বুঝে উঠতে পারছি না। জীবনের শেষ সঞ্চয়টুকু দিয়ে জমি কিনেছিলাম। কিন্তু এখন সেটা চোখের সামনে মাফিয়ারা ভোগ দখল করছে। চাষাবাদ শুরু করে দিয়েছে।
পুলিশকর্তা রতন বাবু জানিয়েছেন, ইংরেজবাজার থানায় অভিযোগ দায়েরের পরেও যখন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হল না, শেষ পর্যন্ত আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি। আমি আমি এর শেষ দেখে ছাড়বো। এ ব্যাপারে পরিবার নিয়ে নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির সঙ্গেও দেখা করব।
এই ঘটনায় আশঙ্কিত পুলিশ আধিকারিক প্রশ্ন তুলেছেন, একজন পুলিশের জমি যদি মাফিয়ারা জোর করে দখল করে নেয়। তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবেন। ইংরেজবাজার থানার একাংশ পুলিশকর্তার বিরুদ্ধেও তিনি তার ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন।
যদিও এ ব্যাপারে জমি দখলকারীদের বক্তব্য, তাদের বিরুদ্ধে ওটা সমস্ত অভিযোগ মিথ্যে। তারা কারো জমি অন্যায়ভাবে দখল করেনি। এই স্থানে আদালতের নির্দেশে সমস্ত নির্মাণ কাজ বন্ধ আছে। যদিও এ ব্যাপারে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে কোনও রকম প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

7 + 16 =