প্রসূতি বিভাগে বিড়াল দেখে সুপারকে কড়া বার্তা অগ্নিমিত্রা পালের, পুলিশকে গোরু তাড়াবার নির্দেশ বিধায়িকার

নিজস্ব প্রতিবেদন, আসানসোল: আসানসোল জেলা হাসপাতাল থেকে পুলিশ ও সিভিক ভলেন্টিয়ারকে গোরু তাড়াবার নিদান দিলেন অগ্নিমিত্রা পাল। সেই সঙ্গে হাসপাতালের কোনও ওয়ার্ডে যেন বিড়াল প্রবেশ না করে, সুপারকে এমনই করা বার্তাও দিলেন তিনি।
বুধবার বেলা বারোটা নাগাদ দলীয় কর্মীর নবজাতককে আসানসোল জেলা হাসপাতালে দেখতে যান আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল। নবজাতককে দেখতে প্রসূতি বিভাগে ঢোকা মাত্রই তিনি ওই ওয়ার্ডে কয়েকটি বিড়ালের বিচরণ লক্ষ্য করেন, এর পরই মেজাজ হারান বলে দাবি। তিনি তৎক্ষণাৎ যোগাযোগ করেন হাসপাতাল সুপার নিখিল চন্দ্র দাসের সঙ্গে এবং প্রসূতি বিভাগে এইরকম পরিস্থিতি কেন সেই বিষয়ে প্রশ্ন করেন। এরপর তিনি সুপারকে সঙ্গে নিয়ে হাসপাতাল পরিদর্শনে বের হন।
প্রথমেই তিনি চলে যান হাসপাতাল চত্বরে পার্কিং করে রাখা বেশ কয়েকটি বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স এবং অটো ও টোটোর কাছে। তিনি দাঁড়িয়ে থেকে হাসপাতাল চত্বর থেকে ওই অ্যাম্বুল্যান্স ও অটো – টোটোগুলিকে বাইরে বের করে দেন। এরপর তিনি চলে যান জেলা হাসপাতালের নতুন ভবনে। নতুন ভবনে বিভিন্ন জায়গায় জমে থাকা পরিত্যক্ত প্লাস্টিক ও জঞ্জাল নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। এই সময় তিনি লক্ষ্য করেন হাসপাতালের ইসিজি বিভাগের জানালায় কোনও পর্দা নেই, এমনকি মহিলাদের ইসিজি করার জন্য কোনও সুব্যবস্থা নেই।
হাসপাতালের সাফাই কর্মীদের নিয়মিত সাফাই কার্য চালানোর পাশাপাশি যে সমস্ত রোগী বা রোগীর পরিজন হাসপাতাল চত্বর ময়লা করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেন। পরিদর্শন শেষে হাসপাতাল থেকে বেরবার সময় হাসপাতালে জরুরি বিভাগের সামনে বেশ কয়েকটি গোরুকে ঘোরাফেরা করতে দেখেন অগ্নিমিত্রা পাল। তিনি গাড়ি থেকে নেমে গোরুগুলির সামনে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ ও সিভিক ভলেন্টিয়ারকে নির্দেশ দেন ওই গবাদি পশুগুলিকে হাসপাতাল চত্বর থেকে বের করে দেওয়ার জন্য এবং ভবিষ্যতে তাঁরা যেন এটা করে থাকেন, সেই ব্যাপারে নিদান দেন তিনি। নিদান পাওয়া মাত্রই সিভিক ভলেন্টিয়াররা হাসপাতাল চত্বর থেকে গোরু তাড়াতে নাজেহাল হয়ে পড়েন। অনেক প্রচেষ্টার পর সফল হন তাঁরা।
অগ্নিমিত্রা পালের দাবি, হাসপাতালে এসে তিনি যা যা পরিস্থিতির সম্মুখীন হলেন, তা একপ্রকার চিন্তার বিষয়। যত্রতত্র দাঁড়িয়ে রয়েছে বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স ও অটো-টোটো, হাসপাতাল চত্বর অপরিচ্ছন্ন। প্রসূতি বিভাগে ঘুরে বেড়াচ্ছে বেড়াল, যা থেকে নবজাতক ও প্রসূতির সংক্রমণ ছড়াতে পারে। হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগী ছাড়া বহির্বিভাগে দেখানো গরিব মানুষের বিভিন্ন রকম স্বাস্থ্য পরীক্ষার কোনও ব্যবস্থা নেই। স্বাস্থ্য পরীক্ষা যাতে সর্বসাধারণের জন্য করানো যায়, তার জন্য তিনি জেলা হাসপাতাল সুপারকে আবেদন করেছেন। হাসপাতালের ল্যাবে টেকনিশিয়ানের অভাব, এই ব্যাপারে তিনি জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সাথে কথা বলবেন বলে জানান। তাঁর দাবি, হাসপাতালে রোগীদের জন্য সমস্ত ওষুধ উপলব্ধ নেই। প্রয়োজনে আয়ুষ্মান প্রকল্পে অমিল ওষুধ আনার আবেদন করছেন।
তিনি জানান, মাসের প্রতি ১০ দিন অন্তর জেলা হাসপাতাল পরিদর্শনে আসবেন। কারণ তিনি রোগী কল্যাণ সমিতির কোনও সদস্য না হলেও এই হাসপাতাল তাঁর বিধানসভার অন্তর্গত। তাই রোগীদের উন্নত পরিষেবা দেওয়ার জন্য যা যা করণীয় তা তিনি করবেন বলেও আশ্বাস দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen − 4 =