বাংলা ক্রিকেটের চিরযুবক অনুষ্টুপ মজুমদার ফের একবার প্রমাণ করলেন, বয়স কেবল সংখ্যামাত্র। একচল্লিশ পেরিয়ে গেলেও রঞ্জি ট্রফিতে এখনও তিনি বাংলার ব্যাটিং স্তম্ভ। রঞ্জি দলের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব সামলানোর পাশাপাশি স্থানীয় ক্রিকেটেও নতুন ইনিংস শুরু করলেন অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার। বুধবার তিনি সই করলেন মোহনবাগান ক্লাবের হয়ে। কালীঘাট ক্লাবের জার্সি ছেড়ে এবার সবুজ-মেরুন শিবিরে দেখা যাবে তাঁকে।
১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে সিএবি আয়োজিত স্থানীয় ক্রিকেটের দলবদল ও ক্রিকেটারদের রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া। বুধবার, দশম দিনে মোট ৩৭৫ জন ক্রিকেটার নতুন দলে সই করেন। তবে সবার নজর কেড়েছিলেন অনুষ্টুপ। তিনি জানিয়েছেন, এখনও অবসর নেওয়ার কথা ভাবছেন না। বরং শারীরিকভাবে ফিট থাকা এবং ভাল দল গঠন করাই তাঁর লক্ষ্য। অনুষ্টুপ বলেন, “ফিট থাকাটাই আসল। মোহনবাগান খুব ভাল দল গড়েছে। ভবানীপুর থেকে বেশ কয়েকজন মানসম্মত ক্রিকেটার যোগ দিয়েছেন। পুরনো প্লেয়াররাও রয়েছে। আশা করছি মরশুমটা দুর্দান্ত যাবে।”
মোহনবাগান এবার বেশ শক্তিশালী দল গড়েছে। ভবানীপুর ক্লাব থেকে বিবেক সিংহ, আমির গনি, শাকির হাবিব গাঁধী, দীপক কুমার, অভিষেক রামন, রাজকুমার পাল, অরিন্দম ঘোষ, রবি কুমার ও প্রদীপ্ত প্রামাণিককে দলে নিয়েছে। অনুষ্টুপ কালীঘাট থেকে আসায় দল আরও অভিজ্ঞতা ও স্থিরতা পেল। অন্যদিকে, বড়িশা স্পোর্টিং ছেড়ে কালীঘাটে যোগ দিয়েছেন কাজি জুনেইদ সইফি। ইস্টবেঙ্গল ছেড়ে মহমেডান স্পোর্টিংয়ে গিয়েছেন ঋত্বিক চট্টোপাধ্যায় ও শ্রেয়ান চক্রবর্তী। বৈভব যাদব গিয়েছেন কালীঘাটে। আবার সায়ন ঘোষ ও বিকাশ সিংহ মোহনবাগান থেকে সরে গিয়ে যোগ দিয়েছেন কালীঘাটে।
দলবদলের অন্দরে বেশ রদবদল হয়েছে। দীপক কুমার মাহাতো ও রাহুল বাসফোর তপন মেমোরিয়ালে গিয়েছেন। ইস্টবেঙ্গল থেকে একই দলে সই করেছেন অয়ন গুপ্ত। ভবানীপুরে যোগ দিয়েছেন অমিতোজ সিংহ ও অভিষেক দাস। রোহিত কুমার, অনুরাগ তিওয়ারি ও শান্তনু মোহনবাগান থেকে চলে গিয়েছেন ভবানীপুরে। মহমেডান থেকে তৌফিকউদ্দিন মণ্ডল, টাউন ক্লাব থেকে গীত পুরী, যুবরাজ দীপক কেসওয়ানি ও মহম্মদ কাইফ ভবানীপুরের জার্সি গায়ে তুলেছেন। কালীঘাট থেকে মহমেডানে সই করেছেন প্রীতম চক্রবর্তী।
তবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার নিজেদের পুরনো ক্লাবেই থেকে গেছেন। কালীঘাটে থেকে গেছেন কৌশিক ঘোষ, দেবপ্রতীম হালদার, দুর্গেশ কুমার দুবে, সায়ন শেখর মণ্ডল ও শুভম চট্টোপাধ্যায়। মোহনবাগানে থেকে গেছেন ঈশান পোড়েল ও প্রদীপ কুমার। মহমেডান স্পোর্টিংয়ে নিজেদের প্রতিশ্রুতি বজায় রেখেছেন সুদীপ চট্টোপাধ্যায়, গীতিময় বসু, অভিষেক বসু ও চিন্ময় জৈন।
সব মিলিয়ে দলবদলের এই মৌসুমে মোহনবাগান সবচেয়ে শক্তিশালী দল গড়েছে বলেই মনে করছেন অনেকে। অনুষ্টুপের মতো অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানের যোগদান তাদের আরও এগিয়ে রাখবে। স্থানীয় ক্রিকেটে এ মরশুমে তাই নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে মোহনবাগান।

