বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে নিয়ে শীর্ষ আদালতের নির্দেশের পর পথে নামার হুঁশিয়ারি চাকরিপ্রার্থীদের

নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একের পর এক নির্দেশ যখন আলোর দিশা দেখাচ্ছে চাকরি প্রার্থীদের, ঠিক তখনই শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ নির্দেশ দেয়, নিয়োগ সংক্রান্ত যা মামলা তা আর শুনবেন না বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
দেশের প্রধান বিচারপতির এই নির্দেশের পর ক্ষোভে ফেটে পড়েন চাকরি প্রার্থীরা। যাঁরা দিনের পর দিন নিয়োগের দাবিতে ধর্মতলায় বসে আন্দোলন করে চলেছেন। এই চাকরিপ্রার্থীদেরর মধ্যে রয়েছেন প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক, গ্রুপ সি, গ্রুপ ডি সব ক্যাটেগরিই। শুক্রবার এদিন সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ সামনে আসার পরই, চাকরি প্রার্থীরা সমস্বরে দাবি তোলেন, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে এই মামলার শুনানির বেঞ্চে ফিরিয়ে আনতে হবে। শুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশ নিয়ে এক চাকরি প্রার্থী জানান, ‘আমরা খুবই হতাশ। আমরা চাই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে আবার তাঁর বেঞ্চে ফিরিয়ে আনা হোক। তাঁর জন্যই নিয়োগ দুর্নীতির সবটা প্রমাণ হয়েছে। তার জন্য একমাত্র। দীর্ঘদিন ধরে আমরা সুবিচারের অপেক্ষা করছি। আমরা অনেকটা লক্ষ্যে পৌঁছেও গিয়েছি। আমরা চাই ওঁনার হাতেই ফিরিয়ে দেওযা হোক এই মামলা।’ এরই পাশাপাশি এদিনের শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশের পরর ধর্মতলায় বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের ছবি নিয়ে স্লোগান দিতেও দেখা যায় চাকরি প্রার্থীদের। তাঁদের তরফ থেকে সমস্বরে জানানো হয়, ‘আমরা যুব সমাজ অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের পাশে আছি। কাল থেকে আমরা রাস্তায় নামব। আমাদের ভগবান অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তাই ওঁনাকে ষড়যন্ত্র করে সরানো হচ্ছে। ভারতবর্ষের বিচার ব্যবস্থায় স্বাধীন ভারতে প্রথম কালো বিচার ব্যবস্থা আজ প্রমাণিত হল। এই দিন বেকার যুব সমাজ মনে রাখবে। তাঁকে ফিরিয়ে আনতেই হবে। আমরা কোনও কথা শুনব না। রাঘব বোয়ালের পেটে লাথি পড়েছে বলে ওনাকে ষড়যন্ত্র করে সরানো হচ্ছে।’
আন্দোলনকারীদের অপর একটি অংশ এও জানান, ‘দালাল রাজনীতি, দালালদের হাত থেকে আমাদের বাঁচাতে আমাদের অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ভরসা দিয়েছিলেন। আমাদের খুঁটি হিসাবে তিনি দাঁড়িয়েছিলেন।’ পাশাপাশি তাঁরা এও বলেন, ‘আমাদের সমস্ত দিক থেকে প্রোটেকশন দিয়েছিলেন। তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হলে আমাদের কিছু করার নেই। আমাদের বলার ভাষা আমরা হারিয়ে ফেলেছি।’ এরপরেই আন্দোলনকারীরা করজোড়ে বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের কাছে আমাদের অনুরোধ, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে যেন তাঁর স্বমহিমায় তাঁর দায়িত্বে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।’
প্রসঙ্গত, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে একটি বেসরকারি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেন। সেই সাক্ষাৎকার নিয়েই প্রশ্ন ওঠে। মামলার শুনানি চলাকালীন কীভাবে বিচারপতি তা নিয়ে টিভিতে সাক্ষাৎকার দিলেন তা খতিয়ে দেখে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। এরপরই এদিনের নির্দেশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one + five =