নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঁকুড়া: গ্রাম পঞ্চায়েতের পর এবার পুরসভাতেও জয়ী গোঁজ কাউন্সিলরদের ঘরে ফেরাল তৃণমূল। সোমবার বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর পুরসভায় গোঁজ হিসাবে প্রতিদ্বন্দিতা করা তিন কাউন্সিলরের হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে দেন বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষ। উন্নয়নের কর্মযজ্ঞে সামিল হতেই এই যোগদান বলে তৃণমূল দাবি করলেও, কোন সমীকরণে এই যোগদান হচ্ছে, তা নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচন হোক বা বিগত পুরসভা নির্বাচন। উভয় ক্ষেত্রেই নির্বাচনের আগে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব গোঁজ কাঁটা এড়াতে ঘোষণা করেছিল দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে কোন দলীয় কর্মী প্রতিদ্বন্দিতা করলে তাঁর জন্য দলের দরজা চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর থেকেই বদলাতে শুরু করে ছবিটা। বহু ক্ষেত্রে পঞ্চায়েতের বোর্ড দখল করতে মরিয়া তৃণমূল দলীয় ঘোষণাকে তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়ে জয়ী গোঁজ প্রার্থীদের দলে ফেরায়। এবার সেই ঘটনারই পুনরাবৃত্তি দেখা গেল পুরসভায়।
জানা গিয়েছে, ২০২২ সালে পুরসভা নির্বাচনে দলের টিকিট না পেয়ে বিষ্ণুপুর পুরসভায় বিক্ষুব্ধ হয়ে ৮ ও ১২ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল হিসাবে প্রতিদ্বন্দিতা করে জয়লাভ করেন তৃণমূলের পরিচিত মুখ যথা সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় ও হীরালাল দত্ত। দলের টিকিট না পেয়ে কংগ্রেসের টিকিট জোগাড় করে জয় ছিনিয়ে নেন শ্রীকান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটে জিতলেও ওই তিন কাউন্সিলর এতদিন তৃণমূলে ফিরতে পারেননি। তবে শেষ অবধি এদিন বিষ্ণুপুর বিধায়ক কার্যালয়ে বিধায়ক তন্ময় ঘোষের হাত থেকে তাঁরা তৃণমূলের পতাকা কাঁধে তুলে নেন।
দলের টিকিট না পেয়ে এই তিন কাউন্সিলরই যে পুর নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দিতা করেছিলেন, তা তাঁরা নিজ মুখে স্বীকারও করে নিয়েছেন। তাঁদের দাবি, উন্নয়নের কর্মযজ্ঞে সামিল হতেই ফের তাঁরা ফিরছেন নিজের ঘরে। বিধায়কও সুর মিলিয়েছেন দলবদলুদের গলাতেই। কিন্তু দলবদলুদের চিরাচরিত যুক্তির আড়ালে কী রয়েছে অন্য কোনও সমীকরণ? অন্তত তেমনটাই দাবি করছে বিরোধী কংগ্রেস ও বিজেপি। দু’পক্ষেরই দাবি এভাবে দলবদল আসলে ভোটারদের সঙ্গে প্রতারণাই।