কলকাতা: ব্রেন ডেথ ঘোষণার পর কিডনি, লিভার, হার্ট দান করা হয়েছিল। শেষে অঙ্গহীন শরীরটাও দান করা হল আরজিকর মেডিক্যাল কলেজে (R G Kar Medical College)। আরজিকর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, প্রয়াত মঞ্জুবালার কঙ্কালটা বের করা হবে। ডাক্তারি ছাত্রদের পড়াশোনায় তা কাজে লাগবে। শহরে তো বটেই, এ রাজ্যে অঙ্গদানের পর কোনও মৃতদেহ দান করা নজিরবিহীন।
৪ জুলাই বাইক দুর্ঘটনায় মাথায় গুরুতর আঘাত পান মঞ্জুবালা ভক্ত। তাঁকে ভর্তি করা হয়েছিল শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। ৬ জুলাই হাসপাতালের পক্ষ থেকে জানানো হয় ব্রেন ডেথ হয়েছে মঞ্জুদেবীর। স্ত্রীর মৃত্যুর পর অন্যজনের দেহে বেঁচে থাকুন, চেয়েছিলেন স্বামী রমেশ ভক্ত। এর পরই যোগাযোগ করা হয় গণদর্পণের সঙ্গে। সেইমতো মঞ্জুবালা দেবীর কিডনি, হার্ট, কর্নিয়া দান করা হয়। পড়ে ছিল অঙ্গহীন দেহটা। সেটাও সোমবার দান করা হল আর জি কর মেডিক্যাল কলেজের অ্যানাটমি বিভাগে। বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ভাস্কর পাল জানিয়েছেন, মৃত্যুর পর দেহের সব কিছু যে নতুন করে কাজে লাগতে পারে তার প্রমাণ দিয়ে গেলেন মঞ্জুদেবী।সাধারণত অরগ্যান ডোনেশনেরপর মৃতদেহ দান করার নজির নেই। উল্লেখ্য, গণদর্পণের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত ব্রজ রায়ের প্রচেষ্টাতেই বাংলায় প্রথম মরদেহের ব্যবহারপোযোগী কোষগুলির সদ্ব্যবহার করতে পারেন চিকিৎসাশাস্ত্রের মানুষজন। গণদর্পণের পক্ষ থেকে শ্যামল চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘আজ দিকে দিকে যে অঙ্গ প্রতিস্থাপন হচ্ছে, তা সম্ভব হচ্ছে দ্রুত ব্রেন ডেথ ঘোষণার ফলেই।শুধুমাত্র মঞ্জুবালা ভক্তর দেহের কঙ্কালের ব্যবহারই নয়, আরজি কর মেডিক্যাল কলেজে শিশুর রোগ নির্ণায়ক ময়নাতদন্ত হচ্ছে। কেন তা যুগান্তকারী? ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. সোমনাথ দাস জানিয়েছেন, রোগ নির্ণায়ক ময়না তদন্ত হয়েছে। কিন্তু মায়ের পেটের মধ্যে শিশু কেন মারা যায়? তা জানতে ময়নাতদন্ত এই প্রথম। ‘ইন্ট্রাইউটেরাইন ফেটাল ডেথ’ সম্বন্ধে জানতে সাহায্য করবে এই ময়নাতদন্ত।
ডা. সোমনাথ দাসের কথায়, সাধারণভাবে বাচ্চা অসুস্থ হলে তাকে চিকিৎসা করে জানা যায় কেন সে অসুস্থ হল। কিন্তু মায়ের গর্ভেই কেন বাচ্চা মারা যায়? তা জানতে অটোপসি হয়নি এতদিন। গত সোমবার তা প্রথম হয়েছে।