অবরোধ প্রত্যাহার কুড়মিদের, তবে জারি থাকবে আন্দোলন

অবেশেষে রবিবার অবরোধ প্রত্যাহার করলেন কুড়মিরা। কুড়মি সম্প্রদায়কে তফশিলি উপজাতির আওতাভুক্ত করা, সারনা ধর্মের স্বীকৃতি এবং কুড়মালি ভাষাকে সংবিধানের অষ্টম তফশিলের অন্তর্ভুক্ত করার দাবি-সহ একাধিক দাবিতে কুড়মি সমাজের তরফ থেকে চালানো হচ্ছিল আন্দোলন। তারই জেরে করা হয় সড়ক এবং রেল অবরোধ। অবশেষে নবান্নের তরফ থেকে চিঠি পাওয়ার পর এই অবরোধ প্রত্যাহার করা হয় রবিবার। তবে মেলেনি সমাধান সূত্র। এদিকে সূত্রে খবর, জঙ্গলমহল জুড়ে আন্দোলন প্রত্যাহার করা হলেও আন্দোলন জারি থাকেব তা জানিয়ে দিয়েছেন কুড়মিরা। এদিকে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খেমাশুলিতে এখনও জারি রয়েছে আন্দোলন।
এই আন্দোলনের নেতা অজিত প্রসাদ মাহাতো জানান, ‘এই আন্দোলন কোনও রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় নয়। তাঁরা নিজেরাই এই আন্দোলন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রশাসনের তরফ থেকে তাঁরা সেভাবে সহযোগিতা পাননি। এদিকে প্রচণ্ড দাবদাহে কষ্ট পাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। রাস্তাঘাট অবরুদ্ধ, ট্রেন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ আরও সমস্যায় পড়ছেন দেখেই এই অবরোধ তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
এদিকে সূত্রে খবর মিলছে, শনিবার রাতভোর পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করেন কুড়মি আন্দোলনের নেতৃত্ব। সারা রাত আলোচনা করেও কোনও সমাধানসূত্র বের হয়নি। ফলে এই অবরোধের জেরে প্রতিদিনই বহু ট্রেন বাতিল করতে হয়। চরম সমস্যায় পড়েন সাধারণ মানুষ। এমনকী রেলের তরফে এ আবেদনও জানানো হয়, রাজ্য সরকার যাতে জিআরপি এবং রাজ্য পুলিশের মাধ্যমে এই অবরোধ তোলার ব্যবস্থা করে সে ব্যাপারেও। প্রয়োজনে আরপিএফ-ও সাহায্য করবে বলে জানানো হয় রেলের তরফ থেকে পাঠানো ওই চিঠিতে। এদিকে এরপরই রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়, রাজ্যের তরফ থেকে যা পদক্ষেপ করার ছিল তা করা হয়েছে। একইসঙ্গে এও জানানো হয়, রেল নিজেদের তরফ থেকে কড়া ব্যবস্থা নিতে পারে। রাজ্য প্রশাসন তাতে কোনও বাধা দেবে না।
প্রসঙ্গত, আদিবাসী কুড়মি জাতিকে তফশিলি উপজাতির তালিকাভুক্ত করা, সারনা ধর্মের স্বীকৃতি, কুড়মালি ভাষাকে সংবিধানের অষ্টম তফসিলের অন্তর্ভুক্ত করা-সহ রাজ্য সরকারের সিআরআই অর্থাৎ কালচারাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট রিপোর্ট কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠানোর দাবিতে ১ এপ্রিল থেকে জঙ্গলমহলে শুরু হয় ‘ঘাঘর ঘেরা’ নামে এই অবরোধ কর্মসূচি। গত ১ এপ্রিল থেকে পশ্চিমবঙ্গের ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া সহ বিহার, ঝাড়খণ্ড ও ওড়িশা রাজ্যের জঙ্গলমহল এলাকা জুড়ে ‘ঘাঘর ঘেরা’ নামে এই লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচির নেওয়া হয়। এখানে এখটা তথ্য দিয়ে রাখা শ্রেয়, এর আগেও কুড়মিদের তালিকাভুক্ত করার জন্য বিভিন্ন দাবিতে পুজোর আগে খড়্গপুরের খেমাশুলিতে কেন্দ্র সরকারের অধীনে থাকা রেলপথ আর জাতীয় সড়ক টানা পাঁচ দিন ধরে অবরোধ করেছিলেন। তাতে বিশাল প্রভাব পড়ে গোটা রাজ্যেই। এবারও পাঁচ দিন পরই উঠল অবরোধ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

10 − 2 =