করোনার রক্তচক্ষু কাটিয়ে কুমোরটুলিতে ব্যস্ততা, বিদেশ থেকে আসছে বায়না

কলকাতা: করোনা থাকলেও, করোনার রক্তচক্ষু এখন নেই। দু’বছর ধরে মানুষের জীবনে জাঁকিয়ে বসা লকডাউন, সোশ্যাল ডিসট্যান্সিং -এর বিভীষিকা ছেড়ে আবার চেনা ছ¨ে ফিরতে চাইছে মানুষ। ভাসতে চাইছে উৎসবে। আর তারই প্রভাব এবার কুমোরটুলিতে। গত দু’বছরের বিক্রি বাট্টার খরা কাটিয়ে আবার সাজ সাজ রব সেখানে। দেশ ও বিদেশ থেকে আসছে একের পর এক বায়না। কুমোরটুলি যেন আবার আগের ব্যস্ততায় ফিরছে। এখন মে মাস। দুর্গাপুজোর বাকি আর মাস পাঁচেক। অনেক বড় পুজোরই কাজ শুরু হয়ে গেছে, বরাত পৌঁছে গেছে কুমোরটুলিতে। শহরের বিভিন্ন পুজো কমিটি ইতিমধ্যেই বায়না করেছে। কিন্তু কুমোরটুলিতে এবছর আরও একটি বড় খুশির ব্যাপার হল, বিদেশ থেকে পাওয়া অসংখ্য অর্ডার। রেকর্ড সংখ্যক দুর্গাপ্রতিমা বিদেশে পাড়ি দিচ্ছে।
মাস কয়েক আগেই ইউনেস্কোর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে দুর্গাপুজো। ফলে বিদেশে এবছর দুর্গাপুজোর সংখ্যা অনেক বেড়েছে। তারই ফল পাচ্ছেন কুমোরটুলির মৃৎশিল্পীরা। এবছর কুমোরটুলির বিভিন্ন স্টুডিওর শতাধিক মূর্তি যাচ্ছে আমেরিকা, জাপান, দুবাই, ইতালি, ম্যাঞ্চেস্টার, জার্মানি, ইত্যাদি বিভিন্ন দেশে। সব মিলিয়ে, স্বস্তির শ্বাস ফেলছেন শিল্পীরা।
শিল্পী কৌশিক ঘোষের পরিবার। বংশ পরম্পরায় প্রতিমাশিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে তাঁরা। এবছর তাঁর তৈরি ৩৫টি ঠাকুর বিদেশে যাচ্ছে। গত বছরের তুলনায় এবছর পরিস্থিতি অনেকটাই ভালো বলে মানছেন তিনি। তথ্য বলছে, করোনার আগে কুমোরটুলি থেকে ৬০-৭০টা ঠাকুর বিদেশে যেত। গত বছর মেরেকেটে বাইরে গেছিল ২৫-৩০টি ঠাকুর। সেখানে এবছর একশোর বেশি ঠাকুর বিদেশে যাচ্ছে। তবে এ বছর কাজের বাজেটও বেড়ে গিয়েছে খানিকটা। পেট্রপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির জেরে দাম বেড়েছে ঠাকুর তৈরির কাঁচামালের। খরচ বেড়েছে প্রতিমা বিদেশে পাঠানোর আনুষঙ্গিক খরচও। সেই হিসেবে দামও বাড়াতে হয়েছে। কিন্তু মৃৎশিল্পীদের আশা, ন্যায্য দাম তাঁরা পাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thirteen − 5 =