নেপালের জেল থেকে মুক্তি পেতে চলেছে ‘বিকিনি কিলার’ চার্লস শোভরাজ। বুধবার সে দেশের সুপ্রিম কোর্ট ১৯ বছর ধরে জেলবন্দি এই ফরাসি অপরাধীকে মুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছে বলে সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে।
সত্তরের দশক এবং আশির দশকের গোড়ায় থাইল্যান্ড-সহ বিভিন্ন দেশে মহিলা পর্যটকদের মাদক খাইয়ে খুনের অভিযোগ রয়েছে শোভরাজের বিরুদ্ধে। তাঁর অধিকাংশ শিকারের পরনেই নাকি থাকত বিকিনি। খুনের ধরন দেখে শোভরাজকে বলা হত ‘দ্য স্প্লিটিং কিলার’। হত্যাকাণ্ডের পরে সরীসৃপের মতো মসৃণ পথে পালানোর কায়দা তাকে নাম দিয়েছিল ‘দ্য সারপেন্ট’।
শুধু হত্যাই নয়, একাধিক জালিয়াতির অভিযোগও রয়েছে চার্লস শোভরাজের বিরুদ্ধে। ১৯৮৬ সালে চার্লস শোভরাজ, তার সহযোগীদের সঙ্গে নিয়ে নয়াদিল্লির তিহার জেল থেকে পালিয়েছিল। কিন্তু দ্রুতই ধরা পড়েছিল সে। ১৯৯৭ সালে সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর মুক্তি পেয়েছিল সে। এরপর, ২০০৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর, নেপালের এক ক্যাসিনোর বাইরে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছিল নেপালি কর্তৃপক্ষ। ১৯৭৫ সালে জাল পাসপোর্ট নিয়ে নেপালে ঢুকেছিল সে। সেখানে, ২৯ বছরের মার্কিন নাগরিক কোনি জো বোরোনজিক এবং তাঁর প্রেমিকা ২৬ বছরের কানাডার নাগরিক লরেন্ট কেরিয়েরকে হত্যা করেছিল সে। ওই দুই বিদেশী পর্যটককে হত্যা করার দায়ে তাকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। সেই সঙ্গে জাল পাসপোর্ট ব্যবহার করার জন্য তাকে আরও এক বছরের কারাদণ্ড এবং ২০০০ টাকা জরিমানা করা হয়েছিল।
বিশ্বের অপরাধ মানচিত্রে অন্যতম কুখ্যাত ‘সিরিয়াল কিলার’ একাধিক ভাষায় পারদর্শী শোভরাজ তার সুদর্শন চেহারা এবং আকর্ষণীয় ব্যক্তিত্বকে কাজে লাগাতেন ‘শিকার’কে বাগে আনতে।
৯৭৫ সালে কাঠমাণ্ডুতে দুই পর্যটককে খুনের মামলায় শোভরাজকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন জেলের সাজা দিয়েছিল নেপালের আদালত। সে দেশের সুপ্রিম কোর্ট প্রায় দু’দশক জেলবন্দি শোভরাজের মুক্তির আবেদন মঞ্জুর করল।