শনিবার রাতে কেষ্টপুর উদয়নপল্লিতে লোহার ব্রিজ থেকে কেষ্টপুর খালে পড়ে যান এক যুবক, এমনটাই খবর আসে পুলিশের কাছে।যদিও স্থানীয়দের অনেকেরই দাবি, ওই যুবক পড়ে যাননি। ঝাঁপ দিয়েছেন। এখানেই উঠে আসছে মানসিক অবসাদের কথা। যুবকের নাম গৌতম মল্লিক। তিনি উদয়নপল্লি এলাকার বাসিন্দা। এরপর চলে রাতভর তল্লাশি।রবিবার সকালেই বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সদস্যরা কেষ্টপুর খালে নামেন। নৌকা নিয়ে চলে তল্লাশি। খোঁজ চালাচ্ছে বাগুইআটি থানার পুলিশও। ১৯ ঘণ্টা এমন তল্লাশির পর অবশেষে উদ্ধার হয় উদয়নপল্লির এই যুবকের দেহ।
এদিকে গৌতমের পরিবার সূত্রে খবর, দীর্ঘদিন থেকেই ডেলিভারি বয়ের কাজ করতেন এই গৌতম। তবে তিনদিন আগে তিনি মদ্যপ অবস্থায় এলাকায় ঘোরাঘুরি করছিলেন।এই সময়ই তিনি তাঁর গাড়ির চাবি নিজের গাড়িতে না লাগিয়ে অন্যের গাড়িতে লাগিয়ে দিয়েছিলেন। আর এই ঘটনা স্থানীয়দের নজরে আসতে তাঁরাই খবর দেন পুলিশে। এরপর পুলিশ এসে ধৃত গৌতমকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। সঙ্গে নিয়ে যায় তাঁর গাড়ি। পুলিশের তরফে এও জানানো হয়, থানায় এসে বৈধ কাগজপত্র দেখালে তারপরই ছাড়া হবে গাড়ি। এই প্রসঙ্গেই গৌতমের পরিবারের সদস্যদের দাবি, এ ঘটনার পর থেকেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন গৌতম। সেই কারণেই আত্মহত্যার চেষ্টা করে থাকতে পারেন।
এদিকে এই ঘটনায় তদন্তে নামে পুলিশ। তারা জানতে চান, সম্প্রতি কোনও বিষয়ে পারিবারিক কোনও সমস্যা হয়েছে কি না তা নিয়েও। তদন্তকারী আধিকারিকেরা কথা বলেন, গৌতমের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে।এরই পাশাপাশি বাগুইআটি থানার তরফ থেকে দাবি করা হয়, নিখোঁজ যুবকের বাড়ি থেকে সুইসাইড নোট উদ্ধার হয়েছে।কালো কালিতে লেখা ওই সুইসাইড নোটে যুবক তাঁর মৃত্যুর জন্য কাউকে কাঠগড়ায় তোলেননি। তবে প্রতিবেশীকে উদ্দেশ্য করে তিনি লিখেছেন, বাইকটি রাখা রয়েছে বাগুইআটি থানায়। সেটা যেন বৈধ কাগজপত্র দেখিয়ে ছাড়িয়ে নিয়ে আসা হয়।
পাশাপাশি বাগুইআটি থানার তদন্তাকারী আধিকারিকেরা এও জানতে পারেন, গৌতমের বাবা-মায়ের মৃত্যু হয়েছে আগেই। অভিযোগ ছিল কাকা-জ্যাঠারা সম্পত্তি থেকে তাঁকে বঞ্চিত করেছেন। সেই কারণে মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন দীর্ঘদিন ধরেই। এরপর আবার রোজগারের একমাত্র অবলম্বন বাইকটিকে পুলিশ আটক করলে আর ঠিক থাকতে পারেননি। তখনই কেষ্টপুর উদয়নপল্লীর খাল থেকে ঝাঁপ দেন গৌতম মল্লিক নামে ওই যুবক।