হাওড়া: হাওড়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসে হাসপাতাল কর্মীদের হাতে প্রহৃত হতে হল হাওড়া কোর্টের উকিল এবং তাঁ স্ত্রীকে। বুধবারের এই ঘটনায় অভিযোগের আঙুল উঠেছে,হাসপাতাল কর্মীদের বিরুদ্ধেই। সূত্রে খবর, বুধবার দুপুরে সরকারি হাসপাতালের সাধারণ বহিঃবিভাগে চিকিৎসককে দেখাতে আসেন হাওড়া কোর্টের এক উকিল এবং তাঁর স্ত্রী। অভিযোগ, হাসপাতাল কর্মীদের বিরুদ্ধে হেনস্থার প্রতিবাদ করলে ওই কাউন্টারে কর্তব্যরত হাসপাতাল কর্মীদের সঙ্গে বচসা বাধে দম্পতির। এরপরই তাঁদেরকে কিল, চড় ঘুষি ও লাথি মারাও হয়। ঘটনায় রোগীর স্বামী আহত হন বলেই সূত্রে খবর।এরই পাশাপাশি অন্যান্য রোগীদেরও অভিযোগ, বহির্বিভাগে দু’টাকা দিয়ে টিকিট কাটতে এলে প্রতিদিনই এমন ঘটনা ঘটান কর্তব্যরত কর্মীরাই। বুধবার এর প্রতিবাদ করা হলে তাঁদের উপরে নির্মমভাবে হামলা চালায় হাসপাতালের কর্মীরা। রোগীর স্বামীকে মারতে মারতে টিকিট কাউন্টারের ঘরের মধ্যে নিয়ে যায় হাসপাতাল কর্মীরা। ঘরের ভেতরেও তাঁকে কলার ধরে ভয় দেখায় ওই অভিযুক্ত কর্মীরা। গোটা ঘটনাটি ক্যামেরা বন্দি হওয়াতে যথেষ্টই অস্বস্তির মুখে পড়ে হাসপাতাল কর্মীরা।
ঘটনার সূত্রপাত বুধবার দুপুরে। হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে আসেন বিজয় লক্ষ্মী। তিনি জানান কাউন্টারে দেওয়ার দু টাকা খুচরো তার কাছে ছিল না। অনেক লম্বা লাইন থাকায় তিনি অন্য আরেকজনের থেকে দু টাকা চেয়ে দেন। এরপর তার কাগজ কাউন্টারের কর্মী ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে তার স্বামীকে ডেকে আনতে বলে। তার স্বামী এসে জানতে চায় তার স্ত্রীর কাগজ কেন ছুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়েছে সেই ব্যাপারে।এরপরই ওই কাউন্টার থেকে এক মহিলা ও এক পুরুষ কর্মী বেরিয়ে তাঁদেরকে সকলের সামনে অক্থ্য ভাষায় দিতে থাকেন। সঙ্গে শুরু হয় মারধরও।
এদিকে স্থানীয় সূত্রে আরও খবর, আহত ব্যক্তি হাওড়া কোর্টে ওকালতি করেন॥ এই খবর শুনে হাসপাতালে ছুটে আসেন হাওড়া কোর্টের অন্যান্য উকিলরা। এই ধরণের ঘটনার নিন্দা করার পাশাপাশি অভিযুক্ত দুই হাসপাতাল কর্মীর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার দাবিও জানান তারা। যদিও বুধবারের ঘটনা প্রসঙ্গে হাসপাতাল সুপার নারায়ণ চট্টোপাধ্যায় আশ্বাস দিয়ে জানান, এই ঘটনায় যদি হাসপাতালের কোনও কর্মী যুক্ত থাকে তাহলে তার বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পাশাপাশি ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে দেখার আশ্বাসও দেন তিনি। তবে এই ঘটনায় উত্তেজনা ছড়ায় হাওড়া হাসপাতাল চত্বরে। দোষীদের অবিলম্বে শাস্তির দাবি জানান, হাসপাতালে আসা রোগী ও তাঁদের আত্মীয়রা। হাসপাতালের মধ্যে মারধরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে হাওড়া থানার পুলিশ। তারা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপর আর কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে হাওড়া থানার তরফ থেকে হাসপাতাল চত্বরে মোতায়েন করা হয় পুলিশ।