সফল ভাবে কক্ষপথ বদল আদিত্য এল ১ -এর

শনিবার শুরু হয়েছে ভারতের প্রথম সৌর মিশন তথা আদিত্য-এল ১ মিশন। শনিবার সকাল ১১টা ৫০ মিনিটে শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র থেকে সূর্য পথে পাড়ি দেয় আদিত্য এল-১। ইসোরর তরফ থেকে জানানো হয়েছে, সূর্য ও পৃথিবীর ল্যাগরেঞ্জ পয়েন্ট-১-এ স্থাপন করা হবে এই মহাকাশযানকে। সেখান থেকেই সৌর ক্রিয়াকলাপ পর্যবেক্ষণ করবে এই মহাকাশযান।

পাশাপাশি ইসরোর তরফ থেকে এও জানানো হয়েছে, ঠিক চন্দ্রযানের মতো মহাকাশযান আদিত্য এল-১ কেও এক একটি কক্ষপথ উত্থাপন কৌশলের মধ্যে দিয়ে নির্দিষ্ট গন্তব্যের দিকে পাঠানো হবে। অর্থাৎ, সহজ বাংলায় বললেধাক্কা মেরে মেরে আদিত্য-এল১-কে কক্ষপথ বদল করে করে পাঠানো হবে নির্দিষ্ট গন্তব্যে। যার প্রথম কাজটি সম্পাদন হয়েছে রবিবারেই। আর তা যে সফল ভাবেই হয়েছে এমনটাই জানাচ্ছে ইসরো। ইসরোর তরফে টুইটে এও জানানো হয়েছে, স্যাটেলাইটের স্বাস্থ্য স্বাভাবিক রয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক কাজ করছে। বেঙ্গালুরুর ইসট্র্যাক  থেকে প্রথম আর্থ-বাউন্ড কৌশলটি সফল ভাবে সম্পাদিত হয়েছে। নতুন অর্জিত কক্ষপথ ২৪৫ কিলোমিটার X ২২৪৫৯ কিলোমিটার। পরবর্তী কৌশলটি ক্ষেত্রে যে দিন নির্ধারিত হয়েছে তা হল ৫ সেপ্টেম্বর। আর তা করা হবে বারতীয় সময় রাত ৩টের সময়।

এখন এই সূর্ষ মিশন কেন তা নিয়ে জল্পনার অন্ত নেই। এই প্রসঙ্গে ইসরোর তরফ থেকে জানানো হয়েছে যে, সূর্য কী ভাবে মহাকাশে রিয়েল টাইমে আবহাওয়াকে প্রভাবিত করে, সৌরজগতে তার কী প্রভাব পড়ে তা এই মিশনের সাহায্যে জানতে পারবে ইসরো। আদিত্য-এল১ মিশনের উদ্দেশ্য হল করোনাল হিটিং, সৌরবায়ু ত্বরণ, করোনাল মাস ইজেকশন বা সিএমই, সৌর বায়ুমণ্ডলের গতিবিদ্যা ও তাপমাত্রা অ্যানিসোট্রপি অধ্যয়ন করা। আদিত্য-এল১-এ থাকা পেলোডগুলি এই সব তথ্য অন্বেষণের কাজ করবে। পেলোডগুলির সাহায্য নিয়ে গবেষণার কাজ প্রসারিত হবে। পেলোডগুলি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাঠাবে ইসরোর গবেষণা কেন্দ্রে। আর তার জন্য আদিত্য-এল১-কে স্থাপন করা হবে সূর্য ও পৃথিবীর সিস্টেমের ল্যাগরেঞ্জ পয়েন্ট ১ বা এল১-এর চারপাশে হ্যালো কক্ষপথে। যে জায়গায় এই মহকাশযান থাকবে সেখান থেকে পৃথিবীর দূরত্ব ১৫ লক্ষ কিলোমিটার। ওই অবস্থানে কোনও বাধা ছাড়াই সূর্যের উপর নজর রাখতে পারবে আদিত্য।

এখানে বলে রাখা শ্রেয়, আদিত্য-এল১-এ রয়েছে মোট সাতটি পেলোড। ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক পার্টিকেল, ম্যাগনেটিক ফিল্ড ডিটেক্টর ব্যবহার করে ক্রোমোস্ফিয়ার, ফটোস্ফিয়ার ও করোনা বা সূর্যের বাইরের স্তর পর্যবেক্ষণ করবে। সাতটি পেলোডের মধ্যে চারটি রিমোট সেন্সিং পেলোড। তিনটি ইন-সিটু পেলোড। চারটি রিমোট সেন্সিং পেলোডের কাজ সূর্যকে পর্যবেক্ষণ করা, তথ্য সরবরাহ করা। এর মধ্যে একটি পেলোড রয়েছে যার নাম ভিসিবল এমিসন লাইন করোনাগ্রাফ। এই পেলোডটি প্রতিদিন সূর্যের ১ হাজার ৪৪০টি করে ছবি পাঠাবে। সোলার আল্ট্রাভায়োলেট ইমেজিং টেলিস্কোর নামে অন্য পেলোডটি চিত্রিত করবে সৌর ডিস্ক।

তৃতীয় পেলোডটি সোলার লো এনার্জি এক্স-রে স্পেক্রো মিটারের সাহায্যে অধ্যয়ন করবে সৌরশিখা। চতুর্থ পেলোডটি হাই এনার্জি অরবিটিং এক্স-রে স্পেকট্রোমিটার। সূর্যের উচ্চশক্তির এক্স-রেগুলিতে সৌরশিখা অধ্যয়ন করবে। আর তিনটি ইন-সিটু পেলোডের কাজ ল্য়াগরেঞ্জ পয়েন্ট এল১-এ কণা ও ক্ষেত্রগুলির ইন-সিটু তথ্য অন্বেষণ করা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

11 − 6 =