ডিএ নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ চলছে। তার আঁচ পৌঁছেছে দিল্লিতেও। এরই মাঝে ইদের আগে অতিরিক্ত অ্যাড-হক বোনাস পেলেন রাজ্যের সরকারি কর্মীদের একাংশ। রাজ্য অর্থ দপ্তর সূত্রে খবর, রাজ্যের কয়েক হাজার কর্মীর অ্যাকাউন্টে এই বোনাসের টাকা ঢুকেও গেছে। সরকারি কর্মীরা ছাড়াও গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদ, শিলিগুড়ি মহকুমা পর্ষদ, জিটিএ এবং ডিআরডিসি-তে কর্মরত মুসলিম কর্মচারীরা মাথাপিছু ৫,৩০০ টাকা করে অ্যাড হক বোনাস পাচ্ছেন। ২০২২-এ এই অ্যাড হক বোনাসের অঙ্ক ছিল ৪,৮০০ টাকা। এ বার তা ৫০০ টাকা বাড়ানো হয়েছে। প্রসঙ্গত, যাঁদের বেতন মাসিক ৩৮ হাজার টাকার মধ্যে ছিল গত বছর পর্যন্ত তাঁরাই এই বোনাস পেতেন। এ বছর বেতনের ঊর্ধ্বসীমা বাড়িয়ে তা করা হয়েছে ৩৯ হাজার টাকা। বর্তমানে রাজ্য সরকারি কর্মচারীর সংখ্যা আড়াই লক্ষের মতো। এঁদের এক তৃতীয়াংশ ইদ ও দুর্গাপুজোর সময়ে এককালীন বোনাস পান। এই প্রসঙ্গে অর্থ দপ্তরের আধিকারিকরা জানান, , নতুন বেতন কমিশন কার্যকর হওয়ার পর থেকে এখন বেশিরভাগ সরকারি কর্মীই ৩৯ হাজারের বেশি বেতন পান। ফলে তাঁরা অ্যাড-হক বোনাস পান না। এখন মূলত গ্রুপ ডি ও লোয়ার ডিভিশন ক্লার্ক হিসেবে যাঁরা সদ্য কাজে যোগ দিয়েছেন, তাঁরাই এই সুবিধে পেয়ে থাকেন। পাশাপাশি যাঁরা অস্থায়ী ভিত্তিতে সরকারি দপ্তরে কাজ করেন, তাঁরাও অ্যাড হক বোনাস পান। প্রতি মাসে তাঁরা যে মজুরি বা পারিশ্রমিক পান, তার সম অঙ্কের টাকা বোনাস হিসেবে পান অস্থায়ী কর্মীরা। তবে সেটা ৫,৩০০ টাকার বেশি হবে না।
এই প্রসঙ্গে অর্থ দপ্তরের আধিকারিকরা সামনে আনেন বাম জমানার প্রসঙ্গেও। এই প্রসঙ্গে তাঁরা জানান, বিগত বাম সরকারের আমলে খুব সামান্য অ্যাড হক বোনাস পেতেন সরকারি কর্মীরা। ২০০২ সালে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সরকার ১,০০০ টাকা বোনাস ঘোষণা করেছিল। যার প্রতিবাদে মহাকরণে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন কর্মীরা। আর বাম সরকার বিদায় নেওয়ার আগে রাজ্যের সরকারি কর্মীদের অ্যাড হক বোনাসের অঙ্ক ছিল ২,০০০ টাকা। এরপর তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পর বোনাসের অঙ্ক বাড়িয়ে ২,১০০ টাকা করা হয়। সেটাই বাড়তে বাড়তে ২০২২ সালে বেড়ে হয় ৪,৮০০ টাকা। আর এ বার হলো ৫,৩০০।
এদিকে আইএনটিউসি সমর্থিত রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠন কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ-এর সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় অবশ্য এই অ্যাড-হক বোনাসের থেকে অনেক বেশি জোর দেন ডিএ-এর ওপর। কারণ,তাঁর মতে, এই অ্যাড-হক বোনাস বাড়লে সরকারি কর্মীদের খুব একটা লাভ নেই। কারণ, নতুন বেতনক্রম চালু হওয়ার পর বেশিরভাগ কর্মচারী বোনাসের আওতায় পড়েন না। তা ছাড়া এটা এককালীন সুবিধা। এর চেয়ে বরং সরকার আমাদের বকেয়া ডিএ মেটালে বেশি লাভবান হতেন সরকারি কর্মীরা।