রাতের শহরে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর ঘটনা নতুন কিছু নয়। আর এই বেপরোয়া গতির জেরেই ঘটে দুর্ঘটনাও। এবার বেপরোয়া গাড়ির ধাক্কায় দুর্ঘটনার কবলে পড়লেন খোদ পুলিশকর্মীরা। এদিকে সূত্রে খবর, এই বেপরোয়া গতির জেরেই ফের দুর্ঘটনা ঘটল রাতের কলকাতায়। ঘটনাস্থল, শেক্সপিয়ার সরণি থানায় ক্যামাক স্ট্রিট ও মিডিলটন রোডের ক্রসিং। দুর্ঘটনা ঘটে বুধবার রাতে নাকা চেকিংয়ের সময়।
পুলিশ সূত্রে খবর, বুধবার মধ্যরাতে অ্যালেন পার্কের কাছে প্রথমে একটি দ্রুত গতির বিলাসবহুল গাড়িকে আটকানোর চেষ্টা করেন পুলিশ কর্মীরা। অভিযোগ, পুলিশের নির্দেশ না মেনে গতি বাড়িয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে যায় গাড়িটি। সঙ্গে সঙ্গে ওয়াকিটকির মাধ্যমে পরের সিগন্যালের কর্তব্যরত ট্রাফিক সার্জনকে বিষয়টি জানান অ্যালেন পার্কের কাছে থাকা পুলিশ কর্মীরা। খবর পেয়ে বরদান মার্কেটের কাছে নাকা চেকিং-এ গাড়িটিকে আটকানোর চেষ্টা করে পুলিশ। অভিযোগ, সেখানেও নাকা ভেঙে আরও দ্রুতগতিতে বেরিয়ে যায় গাড়িটি। সেই সময় গাড়িটি এক ট্রাফিক সার্জেন্ট এবং এক হোমগার্ডকে ধাক্কা মারে। এরপর গাড়িটিকে ধরতে কন্ট্রোল রুম থেকে থিয়েটার রোডের সমস্ত সিগন্যাল লাল করে দেওয়া হয়। সিগন্যাল লাল দেখে একটি বাড়ির ভেতরে ঢুকে দ্রুত ইউটার্ন নিয়ে পালানোর চেষ্টা করে গাড়িটি। সেই সময় চালক পুলিশকে ছুটে আসতে দেখে ফুটপাতে গাড়ি তুলে দিয়ে রাস্তার উলটো দিকের ফুটপাত ধরে সেটিকে ছোটাতে থাকে। তখনই ফুটপাতে থাকা তিনজন পথচারী গাড়ির ধাক্কায় আহত হন বলে অভিযোগ। পুলিশ সূত্রে খবর, এরপর ফুটপাতে থাকা একটি লোহার বিমে সজোরে ধাক্কা মারে গাড়িটি। সেই মুহূর্তে বেপরোয়া গাড়িটিকে ধরে ফেলে এলাকার লোকজন এবং চালককে নামিয়ে মারধর শুরু হয়। এদিকে সঙ্গে সঙ্গে সেখানে উপস্থিত হয় শেক্সপিয়ার সরণি থানার পুলিশ এবং সাউথ ও ইস্ট ট্রাফিক গার্ডের আধিকারিকরা। চালককে এলাকাবাসীর হাত থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। গাড়িটিকে বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। গোটা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এদিকে এই ঘটনায় আহত হন তিন পুলিশ কর্মী। আহতের মধ্যে একজন হোমগার্ড ও দুই সার্জেন্ট ছিলেন। ওই রাস্তাতে থাকা একটি বাইক থেকে পড়ে যান এক চালকও। শুধু তাই নয়, সেই সময় ফুটপাতে তিনজন পথচারী ছিলেন। তাঁরাও পড়ে গিয়ে আহত দ্রুত আহত পুলিশ কর্মীদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। ইতিমধ্যেই অভিযুক্তদের জেরা করছে পুলিশ। কারণ, পুলিশ আধিকারিকেরা জানতে চাইছেন, তারা কেন এভাবে পালাচ্ছিল সে ব্যাপারেই। খতিয়ে দেখা হচ্ছে গাড়িতে কোনও মাদক ছিল কি না তাও।