রক্ষণাবেক্ষণ না থাকায় পথে নেই বহু সরকারি এসি বাস

বন্ধ বহু সরকারি বাসের রক্ষণাবেক্ষণ। যার জেরে বসে যাচ্ছে একের পর এক সরকারি বাস। সরকারি বাস পেতে নাজেহাল হতে হচ্ছে আমজনতাকে। এর মধ্যে সবথেকে খারাপ অবস্থা এসি বাসের। কারণ, রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যে সব যন্ত্রপাতি দরকার তা খুব সহজে মিলছে না। ঠিকঠাক হচ্ছে না এসি-র গ‌্যাস চার্জ। ফলে তার জেরে বাস ঠাণ্ডা হওয়া তো দূর-অস্ত, বরং কখনও কখনও মাঝরাস্তাতেই থামিয়ে দিতে হচ্ছে বাস। এর ফলে মূলত অফিস টাইমে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন নিত্যযাত্রীরা। আর যে কটি এসি বাস রাস্তায় চলে তার অবস্থাও যে বিশেষ কিছু ভাল তাও বলা যাবে না। যাঁরা নিত্য এই এসি বাসে যাতয়াত করেন তাঁরাই জানেন এই বাসে একটু ভিড় হলেই কেমন এক অস্বস্তিকর অবস্থা তৈরি হয় বাসের মধ্যে। বসে থাকাই দায় হয় যাত্রীদের।
এদিকে পরিবহন দপ্তর সূত্রে খবর, বর্তমানে ৬৩টি এসি ভলভোর মধ্যে ২৫ টার মতো রাস্তায় নামে। বাকিগুলো নানা সমস‌্যায় জর্জরিত হয়ে পড়ে আছে ডিপোয়।এর মধ্যে অশোক লেল‌্যান্ডের যে ৩৫০টি এসি বাস এসেছিল, তার মধ্যে ১২০-১৩০টার মতো রাস্তায় নামছে। সমস্যা মূলত এসি নিয়ে। কারণ, এসি বাস ঠান্ডা রাখতে পাখা লাগানো থাকলেও তার অর্ধেক বিকল। আর এই প্রসঙ্গে দপ্তরের আধিকারিকরা এমনটাও জানান যে, একবার যে বাস বিগড়োচ্ছে তা আর ঠিক হচ্ছে না। কারণ যে সমস্ত সংস্থ‌া রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে, টাকা না পেলে তারা গাড়ির কাজে হাত দিচ্ছে না। একের পর এক বাস তাই বসে যাচ্ছে ডিপোতেই। ৮০টি বৈদ্যুতিক বাস দিয়ে তবু পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কিন্তু তার অবস্থাও যে খুব একটা ভাল তেমনটা নয়। গরম পড়তেই সেই বাসও বেশিরভাগ সময়ে ঠান্ডা হচ্ছে না। বিশেষত দুপুরের দিতে বাস আর ঠান্ডাই থাকছে না বলে অভিযোগ।
তবে রক্ষণাবেক্ষণ ঠিকমতো না হওয়ার মূল কারণ নিগমের কোষাগার ফাঁকা, এমনটাই সূত্রে খবর। বেসরকারি বাসের ভাড়া নিজেরা বাড়িয়ে নিয়েছেন মালিকরা। কিন্তু সাধারণ মানুষের অসুবিধা হতে পারে মনে করেই সরকারি বাসের ভাড়া বাড়ায়নি সরকার। ফলে আর্থিক হাল বেহাল।এদিকে পরিবহণ দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, যতদিন না পর্যন্ত এই ফান্ডের টাকা আসছে, ততদিন এভাবেই খুঁড়িয়ে চলতে হবে। তারপর যে বাসগুলো রাস্তায় নামানোর উপযুক্ত সেগুলোকে সারিয়ে ফের রাস্তামুখো করা হবে।
এই প্রসঙ্গে এদিকে দূষণ কমাতে রাজ্যের তরফে যেখানে আরও বেশি সংখ্যক পরিবেশবান্ধব বৈদ্যুতিক বাস নামানোর উপর জোর দেওয়া হচ্ছে, সেখানে শহরে চলা বাসগুলোর এসি-র এই বেহাল দশা ভাবাচ্ছে পরিবহণ নিগমের কর্তাদেরও। এখানে যে ই-বাসগুলো চলে সেগুলো মূলত ১২ মিটার লম্বা। তাতে ৩২ টনের এসি লাগানো আছে। আর ৯ মিটার বাসে ২৭ টনের। কিন্তু পরিবহণ দপ্তরের কর্তারা বলছেন, বাস যখন এসেছিল তখন ভালই ঠান্ডা হচ্ছিল, কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে না ঠিক করে। তাতেই বিপত্তি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × three =