দুর্গাপুর: দুর্গাপুর গভর্মেন্ট কলেজের বাইরে বুধবার এবিভিপি ও টিএমসিপি’র সংঘর্ষে প্রায় ২০ জন আহত হয়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই এলাকা মূহূর্তের মধ্যে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা পুলিশ সংঘর্ষ সামাল দিতে হিমশিম খায়। শেষমেশ অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে আসেন ডিসিপি (পূর্ব) অভিষেক গুপ্তা ও এসিপি (দুর্গাপুর) তথাগত পাণ্ডে। বিশাল পুলিশ বাহিনী সহ কমব্যাট ফোর্স আসে। আহতদের তড়িঘড়ি দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ঘটনাকে কেন্দ্র করে বেলা বাড়তেই রাজনৈতিক তরজা বড় আকার নেয়। হাসপাতালে এবিভিপি’র আহত কর্মীদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি’র বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পল সহ নেতাকর্মীরা। আহতদের পরিস্থিতি দেখে ও ঘটনার প্রতিবাদে অগ্নিমিত্রা পল ও নেতাকর্মীরা নিউ টাউনশিপ থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখায়। দোষীদের শাস্তি’র দাবিতে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। অপরদিকে টিএমসিপি’র আহত কর্মীদের হাসপাতালে দেখতে আসেন ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর তথা নগর নিগমের মেয়র পারিষদ দীপঙ্কর লাহা।
আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি (দুর্গাপুর) তথাগত পাণ্ডে বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ (এবিভিপি) সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কলেজের এবিভিপি’র নেতাকর্মীরা এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতো এসএসসি ও টেট দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত সমস্ত নেতা-মন্ত্রীকে গ্রেপ্তারের দাবিতে মিছিল করেন।
কলেজের সামনের রাস্তাতে টোটো রিকশাতে মাইক বাজিয়ে এবিভিপি নেতা শুভ গাঙ্গুলি’র নেতৃত্বে চলছিল মিছিল। অভিযোগ, মিছিল চলাকালীন গভর্মেন্ট কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) কর্মীরা হঠাৎই হামলা চালায় মিছিলে। দুই পক্ষের মধ্যেই সংঘর্ষ বেঁধে যায়। ঘটনায় এবিভিপি’র ১৫ জন কর্মী আহত হয় লাঠিসোঁটা’র আঘাতে। অপরদিকে টিএমসিপি’র ২ জন মহিলা কর্মী সহ ৫ জন আহত হয়। সেই মুহূর্তে ঘটনাস্থলে পুলিশ থাকলেও সংঘর্ষ রোখা সম্ভব হয়নি। উত্তেজনা ছড়াতেই ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনী ও কমব্যাট ফোর্স এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়। ঘটনার প্রতিবাদে হাসপাতালে ভিড় করতে থাকে এবিভিপি ও বিজেপি সমর্থকরা। কলেজ ও হাসপাতাল চত্বরে বিশৃঙ্খলা এড়াতে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
কলেজের টিএমসিপি’র নেতা শুভজ্যোতি মজুমদার জানান, এদিন সকালে কলেজের বেশ কয়েকটি বিভাগে পরীক্ষা চলছিল। সেই সময় এবিভিপি’র নেতাকর্মীরা মাইক বাজিয়ে মিছিল করছিল। পরীক্ষার্থীদের অসুবিধার কারণে আমরা মাইক বন্ধ করতে বলেছিলাম। কিন্তু তাঁরা আমাদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে যায়। এবং আমাদের একজনকে মারধর করতেই শুরু হয় মারামারি।
তৃণমূল কাউন্সিলর দীপঙ্কর লাহা জানান, কলেজে পরীক্ষা চলছিল। সেখানে বর্বরোচিত আচরণ এবিভিপি কলেজ গেটে মাইক বাজানো হচ্ছিল। টিএমসিপির ছেলেরা মাইক বাজানোর প্রতিবাদ করলে সংঘর্ষ হয়। তবে এই ধরনের আচরণে ভবিষ্যতে টিএমসিপি’র ছেলে আমাদের হাতের বাইরে চলে গেলে আমাদের কিছু করার থাকবে না।
বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পল জানান, তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদের দুর্নীতি বেরিয়ে আসছে। দুর্গাপুরে তৃণমূল নেতাকর্মীরা ভয় পেয়ে গিয়েছে। এবিভিপি’র ছেলেদের মারধর করেছে। আমরা পুলিশে অভিযোগ জানিয়েছি। আর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছি। যদি গ্রেপ্তার না হয় তাহলে মহকুমাশাসকের দপ্তরের সামনে বড়সড় আন্দোলন করব।