একদিকে যখন এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় হাইকোর্টের রায়ে প্যানেল বাতিলের ফলে প্রায় ২৬ হাজার জনের চাকরি গিয়েছে, অন্য দিকে, শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ সংক্রান্ত অন্য একটি মামলায় প্রাথমিকে মালদার প্রায় ২৫০ প্রার্থীকে চাকরি দিতে বললেন বিচারপতি।কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বেঞ্চ জানিয়েছে, বাম আমলের নিয়োগ প্রক্রিয়াতেই নিয়োগ করতে হবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে। একই প্রক্রিয়ায় বৃহস্পতিবার উত্তর ২৪ পরগনার প্রায় ৪০০ পরীক্ষার্থীকে চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
ভিত্তিতে দু’মাসের মধ্যে মালদার চাকরি প্রার্থীদের নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।২০১০ সালে বাম আমলে প্রাথমিক স্কুলগুলিতে নিয়োগের যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল, সেই প্যানেল বাতিল করে তৃণমূল সরকার। পরে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ২০১৪ সালে নতুন করে নিয়োগ শুরু হয়। মালদহের কয়েক জন প্রার্থী সেই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ত্রুটির অভিযোগ তোলেন। মামলা দায়ের হয়। সেই মামলায় শুক্রবার প্রায় ২৫০ জনকে নিয়োগের নির্দেশ দিল আদালত। বলা হয়েছে, শূন্যপদের ভিত্তিতে নিয়োগ করা হবে। যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি পাবেন এই প্রার্থীরা।
কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বেঞ্চ জানিয়েছে, এই মামলায় বৃহস্পতিবার পর্যন্ত মালদহের যে চাকরিপ্রার্থীরা আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন, তাঁদের সকলকে চাকরি দিতে হবে। প্রাথমিকের এই মামলায় বিচারপতি মান্থার মন্তব্য, ‘এই নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তদন্ত হলে পুরো প্যানেল বাতিল হতে পারত। এত দিন পরে আদালত মনে করছে, কিছু মানুষ চাকরি পাক।’
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে প্রাথমিকে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল তৎকালীন বাম সরকার। ২০১০ সালে ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়। পরের বছর অর্থাৎ, ২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। নতুন এই সরকার বাম আমলের নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে দেয় এবং নতুন প্যানেল প্রকাশ করে। ওই প্যানেলকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা দায়ের হয় হাই কোর্টে। পরে সুপ্রিম কোর্টেও যায় সেই মামলা। শীর্ষ আদালত সে সময়ে তৃণমূল সরকারের পক্ষেই রায় দিয়েছিল। তবে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, বাম আমলের আবেদনকারীদের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সুযোগ দিতে হবে। নতুন কোনও চাকরিপ্রার্থীর আবেদন গণ্য হবে না ওই প্যানেলে।
আদালতের নির্দেশের পরে ওই প্যানেল নিয়েই ২০১৪ সালে আবার নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে রাজ্য সরকার। ২০১৫ সালে সেই প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়। কিন্তু মালদহের কয়েক জন চাকরিপ্রার্থী ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ত্রুটির অভিযোগ তুলে আবার হাই কোর্টে মামলা করেন। সেই মামলাতেই প্রায় ২৫০ জনকে চাকরি দেওয়ার নির্দেশ দিল হাই কোর্ট।