গোটা গ্রামের মানুষ এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন। মাছির আতঙ্কে আতঙ্কিত আস্ত একটা গ্রামের বাসিন্দারা। বাড়ির চারিদিকে শুধু মাছি আর মাছি। যে দিকে তাকাবেন সেই দিকেই মাছি। ঘটনাটি দেখা যাচ্ছে, হুগলি জেলার গোঘাট এক নম্বর ব্লকের ভাদুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সেঁকাটি গ্রামে। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে এত মাছি আসছে কোথা থেকে? গ্রামের মানুষের দাবি, গ্রামের মধ্যে একটা পোলট্রি ফার্ম আছে। আর সেই ফার্ম থেকেই দূষণ ছড়ানোর পাশাপাশি পচা দুর্গন্ধ যুক্ত আবর্জনা ও মুরগির থেকেই মাছির সৃষ্টি হচ্ছে। লক্ষ লক্ষ মাছি সেই ফার্ম থেকে গোটা গ্রামে প্রবেশ করছে। বাড়ির ভিতরে হাজার হাজার মাছি বাসা বেঁধে রয়েছে। এই সেঁকাটি গ্রামের ওই ফার্মটির মধ্যে স্তুপাকারে মুরগির দুর্গন্ধ যুক্ত পায়খানা জমা হয়ে পড়ে রয়েছে। সেইগুলি পরিষ্কার না হওয়ায় মাছির সৃষ্টি হচ্ছে বলে অভিযোগ। তাছাড়া পোলট্রি ফার্মের চারিদিকে নোংরা আবর্জনায় ভর্তি হয়ে রয়েছে। এতেই অতিষ্ঠ হয়ে রয়েছে গ্রামের মানুষ। অথচ কোনও হুঁশ নেই প্রশাসনের। আস্ত একটা গ্রামের মানুষ মাছি আতঙ্কে রয়েছে, কিন্তু সেই বিষয়ে কিছুই জানেন না স্থানীয় পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে ব্লক প্রশাসন বলে অভিযোগ। সেঁকাটি গ্রামের গৃহবধূ রুমা মল্লিক বলেন, বাড়িতে মাছি ভর্তি। খাবার খাওয়া যাচ্ছে না। চারিদিকে কেবল মাছি আর মাছি। জামা কাপড় পরা যাচ্ছে না। পোলট্রি থেকে মাছি আসছে। বাড়িতে বাস করা দায় হয়ে পড়ছে। অপরদিকে অর্চনা হাঁসদা নামে আর একজন গৃহবধূ বলেন, মাছির জ্বালায় অস্থির হয়ে পড়ছে বাচ্চারা। খুব কষ্ট হচ্ছে। ভাতের উপরে মাছির মেলা বসে আছে। জ্বর, পায়খানা বমি বাচ্চাদের লেগেছে আছে। গ্যাস গন্ধে অস্থির হয়ে রয়েছে। পাশাপাশি কাশিনাথ পাখিরা নামে এক ব্যক্তি বলেন, ফার্মের মুরগির পায়খানা পরিষ্কার না হওয়ার জন্য পোলট্রি থেকে মাছির উৎপাদন হচ্ছে। পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। প্রায় দু’বছর ধরে মাছি দেখা যাচ্ছে গোটা গ্রামে। বাচ্চাদের ডায়রিয়া হচ্ছে পায়খানা বমি হচ্ছে। অবিলম্বে এই মাছির হাত থেকে গ্রামবাসীদের না বাঁচাতে পারলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয় মানুষেরা। এই বিষয়ে গোঘাট এক নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মনোরঞ্জন পাল বলেন, বিডিও ও প্রধানের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। একজনের জন্য বৃহৎ সামাজিক অবক্ষয় সহ্য করা হবে না। প্রধানের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা যাতে নেওয়া যায় তা দেখা হবে। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান শান্তিমোহন রায় জানান, বিষয়টি নিয়ে খোঁজখবর নেওয়া হবে। যাতে পোলট্রি ফার্ম পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা হয় সেই বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অপরদিকে আরামবাগ মহকুমার শাসক সুবাসিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হবে বলে জানান। সব মিলিয়ে এখন দেখার আস্ত একটা গ্রামের ৫০ থেকে ৬০ টি পরিবারকে মাছির আতঙ্ক থেকে বাঁচাতে প্রশাসন কি ব্যবস্থা গ্রহণ করে।