ষড়যন্ত্রের শিকার, মুখ খুললেন পার্থ, বিধ্বস্ত অর্পিতা

কলকাতা: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির অভিযোগে গত শনিবার গ্রেপ্তার হয়েছিলেন প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।ইতিমধ্যেই দলীয় পদ, মন্ত্রিত্ব হারিয়েছেন তিনি।গ্রেপ্তারির সাত দিনের মাথায় অবশেষে নীরবতা ভাঙলেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

শুক্রবার হাসপাতালে ঢোকার সময় বলেছিলেন, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। আর বের হওয়ার সময় বললেন ‘যারা ষড়যন্ত্র করেছে, জানতে পারবেন।’ সেই সঙ্গে বললেন, “মমতা ব্যানার্জির সিদ্ধান্ত ঠিক।” তৃণমূল সরকার তাঁকে সমস্ত পদ থেকে সরানোর পরই পার্থর এহেন মন্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।

এদিন বেলা ১২টা নাগাদ শারীরিক পরীক্ষার জন্য ইএসআই হাসপাতালে আলাদা আলাদা গাড়িতে পৌঁছন পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও তাঁর ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়। হাসপাতালে ঢোকার সময়েই পার্থ বলেন, ‘আমি ষড়যন্ত্রের শিকার।’

এতদিন তিনি একেবারেই চুপ ছিলেন। নিজেকে একবার নির্দোষ বলে দাবি করেননি। যার জন্য তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে। কেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় চুপ তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি।

মন্ত্রিত্ব-সহ তৃণমূলের সমস্ত পদ খোয়ানোর পর এই প্রথম নীরবতা ভাঙেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। বেলা ২টো ১৫ নাগাদ হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে গাড়িতে ওঠার সময়ে সেই কথার রেশ ধরেই বলে দিলেন, ‘যারা ষড়যন্ত্র করেছে, জানতে পারবেন।’ এরপরই তাঁকে প্রশ্ন করা হয়, আপনাকে নিয়ে দল যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা কি ঠিক? পার্থর জবাব, ‘দলের সিদ্ধান্ত সঠিক কি না, তা সময় বলবে।’ এরপরই জানতে চাওয়া হয়, মন্ত্রিত্ব ও দলের অন্যান্য পদ থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করা হয়েছে, তা নিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া কী? এর উত্তরে পার্থ বলেন, ‘মমতা ব্যানার্জির সিদ্ধান্ত ঠিক।’ এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের দাবি, ‘গ্রেপ্তার হওয়ার সাতদিন পরে উনি বলছেন ষড়যন্ত্রের কথা। সেটা ওঁর ব্যাপার। উনি নিজেকে ডিফেন্ড করতেই পারেন। তবে চক্রান্ত হয়ে থাকলে আইনের পথ তো খোলা। লড়াই তো চলছে।’

এদিকে, হাসপাতালের সামনে পৌঁছেই কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন অর্পিতা মুখোপাধ্যায় (Arpita Mukherjee)। হাসপাতালে পৌঁছে গাড়ি থেকে নামতেই চাইছিলেন না তিনি। হাত ধরে নামানোর চেষ্টা করা হতেই গাড়ি থেকে পড়ে যান অর্পিতা। বেরনোর সময়ও ছবিটা প্রায় একইরকম। হুইলচেয়ার করে গাড়ি পর্যন্ত নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। তখনও হাউ হাউ করে কাঁদছিলেন অর্পিতা। ভাঙা গলায় বলেন, “আমি আর পারছি না।” এই ছবিতেই স্পষ্ট, মানসিকভাবে বিধ্বস্ত অর্পিতা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − 14 =