পোশাক-বিতর্ক নতুন কোনও বিষয় নয়, আগেও শহরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পোশাক নিয়ে বিতর্ক হয়েছে। এবার সেই একই ঘটনা ঘটল নিউ আলিপুরের বিদ্যাভারতী গার্লস হাই স্কুলে। কোনও শিক্ষায়তনে শিক্ষিকারা মার্জিত রুচিসম্মত পোশাক পরে যাবেন, এটাই সাধারণত দেখা যায়। তবে স্কুলে শাড়ি পরতেই হবে বা সালোয়ার পরলে ক্লাস নিতে দেওয়া হবে না, এমন নির্দেশিকা কোথাও নেই। তবে এমনই ‘ফতোয়া’ জারি করলেন এক স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা। সেই নির্দেশ মানতে রাজি না হওয়ায় শিক্ষিকাকে প্রায় এক মাস ক্লাস নিতে দেওয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ।
সূত্রের খবর, সেই শিক্ষিকার নাম সোমা ভাদুড়ি। গত ১৮ বছর ধরে আলিপুরের এক বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম গার্লস স্কুলে শিক্ষকতা করছেন তিনি। তিনি গানের শিক্ষিকা। এমনিতে নিজেও শাড়ি পরতে পছন্দ করেন। কিন্তু গত ২১ শে ফেব্রুয়ারি ভিড় বাসে তাঁর পায়ে শাড়ি জড়িয়ে যায়। এরপরই তিনি স্কুলে এসে শাড়ির বদলে সালোয়ার পরে আসার আবেদন করেন।
শিক্ষিকার অভিযোগ, স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে তাঁকে জানানো হয়, শাড়ি ছাড়া অন্য কোনও পোশাকে এলে ক্লাস নিতে দেওয়া হবে না। পাশাপাশি প্রধান শিক্ষিকা তাঁকে এও জানান, স্কুলের ঐতিহ্য বজায় রেখে শাড়ি পরেই আসতে হবে। দরকারে ক্লাসের আগে সালোয়ার চেঞ্জ করে শাড়ি পরে আসতে হবে।
আর এখানেই শিক্ষিকা সোমা ভাদুড়ির বক্তব্য, এটা তাঁর অধিকার। পাশাপাশি এও জানান, ‘রুচিসম্মত পোশাক পরলে কোনও সমস্যাই থাকার কথা না।’ পাশাপাশি তিনি জানান, এই পোশাকের কারণে গত একমাস ধরে তাঁর সব ক্লাস বাতিল করা হচ্ছে। তাঁর ক্লাসের সময় অন্য বিষয়ের ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। সোমা দেবী প্রতিকারের জন্য মানবাধিকার সংগঠন, রাজ্য মহিলা কমিশনে আবেদন করেন। এই ঘটনায় সোশ্যাল ঝড় ওঠে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
এই ঘটনায় রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন লীনা গঙ্গোপাধ্যায় জানান, ‘স্কুলে চিঠি পাঠিয়ে জানতে চেয়েছি, ব্যাপারটা আসলে কী। রুচি সম্মত যেকোনও পোশাক পরা যেতেই পারে। তবে আপাতত শিক্ষিকার অভিযোগ পেয়েছি। একপক্ষের কথা শুনে সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। তাই স্কুল কর্তৃপক্ষের বক্তব্যের অপেক্ষায় রয়েছি।’