নিজস্ব প্রতিবেদন, বাঁকুড়া: রাস্তার এ প্রান্তে সরকারি মডেল স্কুল তার ৫০ ফুট দূরত্বে আর এক প্রান্তে ওয়েস্ট বেঙ্গল ওয়েস্টেজ ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড নামে সরকারি অধীনস্থ এক বেসরকারি সংস্থার কারখানা। যে কারখানায় রাজ্যের বিভিন্ন জেলার সরকারি হাসপাতাল এবং বেসরকারি হাসপাতাল থেকে শুরু করে বিভিন্ন সংস্থার বর্জ্য পদার্থ নষ্ট করা হয় বিভিন্ন রাসায়নিক প্রক্রিয়ায়। কিন্তু সেই কারখানায় এবার বারুদ নিষ্ক্রিয় করার ঘটনায় উঠেছে একাধিক প্রশ্ন।
প্রসঙ্গত, উচ্চ শব্দসৃষ্টিকারী বেআইনি বাজি ও আতশবাজি রোধে রাজ্যের বিভিন্ন থানা বাজেয়াপ্ত করেছে একাধিক অবৈধ বাজি ও আতশবাজি। আর সেই সকল বাজি ও আতশবাজি প্রশাসনিক হস্তক্ষেপে নিষ্ক্রিয় করা হচ্ছে এই বেসরকারি সংস্থায়। কিন্তু সেই আতশবাজি নিষ্ক্রিয়র ঘটনায় ভয়ংকর অভিজ্ঞতার সাক্ষী রইলেন সরকারি সেই মডেল স্কুলের ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে শিক্ষক শিক্ষিকা এবং গ্রামের মানুষজন।
স্থানীয়দের দাবি, গত পরশুদিন অর্থাৎ বুধবার পশ্চিম বর্ধমানের হীরাপুর থানায় বাজেয়াপ্ত করা বেশ কিছু আতশবাজি নিষ্ক্রিয় করার জন্য লরিতে করে আনা হয় এই কারখানায়। নিষ্ক্রিয় প্রক্রিয়া চলাকালীন ঘটে বিস্ফোরণ।বিস্ফোরণের তীব্র আওয়াজে গোটা স্কুলজুড়ে শুরু হয় ছাত্রছাত্রীদের হুড়োহুড়ি। ক্লাস থেকে বেরিয়ে আসেন ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে শিক্ষক শিক্ষিকারা। আরও দাবি, বিষয়টি দেখতে স্কুলের শিক্ষক, ছাত্রছাত্রীরা ছাদের ওপরে গেলে দেখতে পান স্কুলের পাশের কারখানা থেকে গোল গোল করে বের হচ্ছে আগুন ও কালো ধোঁয়া। গোটা আকাশ ঢাকা পড়ে কালো ধোঁয়ায়। বিকট আওয়াজ ও ধোঁয়া দেখে আতঙ্কে পড়ে যান কারখানার অদূরে থাকা গ্রামবাসীরাও।
গ্রামবাসীদের দাবি, ভয়ংকর শব্দে গ্রামের কাঁচা বাড়ির দেওয়াল কেঁপে ওঠে। ঘটনার আতঙ্কের ছাপ এখনও গোটা এলাকা জুড়ে রয়েছে। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, স্কুলের অদূরে কী ভাবে গড়ে উঠতে পারে এমন একটি কারখানা। ২০১৬ সালে নির্মিত হয় শালতোড়া ব্লকের পাবয়া গ্রামে সরকারি এই মডেল স্কুল। ২০২১ সালে এই মডেল স্কুলের পাশেই নির্মিত হয় এই বেসরকারি সংস্থা। তাহলে প্রশ্ন উঠছে, সরকারি স্কুলের পাশেই কারখানা নির্মাণে কী ভাবে ছাড়পত্র পেল এ সংস্থা? সংশ্লিষ্ট দপ্তর কি আদৌ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দিয়েছিলেন এই ছাড়পত্র?
তবে স্কুল কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে ছাত্রছাত্রী এমনকি গ্রামের মানুষের একটাই দাবি, এই কারখানায় অবিলম্বে বন্ধ করা হোক বাজি ও আতশবাজি নিষ্ক্রিয়ের কাজ। যদিও শালতোড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।