নিজস্ব প্রতিবেদন, আউশগ্রাম: স্ত্রীর পরকীয়া সম্পর্কের অভিযোগে শাশুড়ি ও তাঁর মেয়েকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আত্মঘাতী হলেন এক ব্যক্তি। ঘটনাটি পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রামের ছোড়া গ্রামের আদিবাসীপাড়ার। বুধবার এই ঘটনাকে ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। খবর পেয়ে এলাকায় পৌঁছয় পুলিশ। এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ।
এলাকা সূত্রে জানা গিয়েছে, আউশগ্রামের ছোড়া আদিবাসীপাড়ায় মঙ্গলবার গভীর রাতে শাশুড়িকে ও স্ত্রীকে ধারালো অস্ত্রের কোপ মারে সোম সোরেন (৪২) নামের এক ব্যক্তি। এরপর তিনি এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান। মৃত্যু হয় শাশুড়ি মঙ্গুলি মুর্মুর (৬৫)। সোমের স্ত্রী সুকতি সোরেনকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে বন নবগ্রাম হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে তাঁঁর অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। তাঁর গলার নলি কেটে দেওয়া হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। বুধবার সকালে ওই গ্রাম থেকে বেশ কিছুটা দূরে মাঠের মধ্যে একটি গাছের ডালে সোম সোরেনের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, স্ত্রী সুকতির সঙ্গে এক ব্যক্তির পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে, এই সন্দেহের জেরেই প্রায় পাঁচমাস ধরে সোমের সঙ্গে অশান্তি চলছিল। এই নিয়ে একাধিকবার আদিবাসীপাড়ায় সালিশি সভাও বসে। কিন্তু স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের উন্নতি কিছুই হয়নি। তখন থেকেই সোম আলাদা থাকতেন। পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল না তাঁর।
সুকতির বাপের বাড়িতে এক আত্মীয়ের বিয়ে ছিল। মঙ্গলবার রাতে বিয়েবাড়ির অন্যান্য মহিলারাও তখন শুয়ে পড়েন। একটি ঘরে ছিলেন সুকতি ও তাঁর বৃদ্ধা মা। সেই সময় সোম ধারালো অস্ত্র নিয়ে চড়াও হন তাদের ওপর। শাশুড়ি ও স্ত্রীকে কোপাতে থাকেন। ঘটনার সময় বাড়ির পুরুষরা কেউ বাড়িতে ছিলেন না। মাত্র কয়েকজন মহিলা ছিলেন। তাঁদের মধ্যে দু’-তিনজন আওয়াজ শুনে চিৎকার শুরু করেন। চিৎকার শুনে পালিয়ে যান সোম। রক্তাক্ত অবস্থায় রাতেই দু’জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মঙ্গুলিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। দু’টি দেহ ময়নাতদন্তের জন্য বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ।