প্রাইমারিতে চাকরি দেওয়ার নাম করে দুই যুবকের কাছ থেকে কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এলাকারই এক তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে। আর এই বিষয়টি জানাজানি হতেই চাঁচল মহকুমার হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তৈমুর রহমান শাসক দলের প্রভাবশালী নেতা তৃনমূলের তথা প্রাক্তন জেলার সাধারণ সম্পাদক। তার বাড়ি হরিশ্চন্দ্রপুর থানা এলাকার ডুমুরিয়া এলাকায়। ওই নেতা এলাকারই কৃষ্ণ মহালদার এবং বিষ্ণু মহালদার নামে দুই যুবকের কাছ থেকে প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকের চাকরি দেওয়ার নাম করে প্রায় সাত লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ। এই কাজে তার মদত দিয়েছে স্থানীয় আরো দুই মহিলা তৃণমূল কর্মী বলে অভিযোগ। কিন্তু দীর্ঘদিন হয়ে যাওয়াতে চাকরি না মেলায় টাকা ফেরত চাইতে গেলে ওই নেতার কাছ থেকে জুটছে প্রাণ-নাশের হুমকি।
প্রতারিত ওই দুই যুবক সম্পর্কে দুই ভাই। তাঁদের অভিযোগ, বাবা মারা গেছে বহুদিন আগে। পরিবারের শেষ সম্বল ছিল একটি ছোট পুকুর। সেই পুকুর বিক্রি করে দুই ভাইয়ের চাকরির আশায় এলাকার দুই মহিলা তৃণমূল কর্মীর মাধ্যমে তৃণমূল নেতা তৈমুর রহমানের কাছে প্রায় সাত লাখ টাকা দিয়েছিলেন। খেলা-ধুলায় সুনাম অর্জন করলেও বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রতিশ্রুতি মিলেছিল চাকরির। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ না হয়ে বাধ্য হয়ে তারা স্থানীয় ওই তৃণমূল নেতা তৈমুর রহমানের খপ্পরে পড়ে বলে অভিযোগ। তাদের কাছ থেক দফায় দফায় প্রায় ৭ লক্ষ টাকা আদায় করেন এই তৃণমূল নেতা। কিন্তু টাকা দেওয়া দীর্ঘদিন হয়ে গেলেও চাকরি মেলা তো দূর অস্ত উল্টে টাকা ফেরত চাইতে গেলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ।
যদিও ওই অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা-তৈমুর রহমান সমস্ত অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, সামনে ভোট। আমার ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করার জন্য এ ধরনের চক্রান্ত করছে এলাকার বিজেপির নেতারা। আমি ওই দুই ভাইকে চিনি না । আর ওদের কাছ থেকে কোন টাকা নিই নি। এদিকে গোটা ঘটনায় ঘিরে তীব্র কটাক্ষ করেছে জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। জেলা বিজেপি সম্পাদক কিষান কেডিয়া জানিয়েছেন, এটা খুব লজ্জার বিষয়। ওই দুই খেলোয়াড় ভাইকে চাকরির দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়েছে। টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো তাদের হুমকি দিচ্ছে। এটা সত্যি লজ্জা। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ করব।
গোটা ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন জেলা তৃণমূল নেতা তথা রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী। তিনি জানিয়েছেন, দলের নাম ভাঙিয়ে কিছু লোক অসামাজিক কাজকর্ম করছে । এগুলো কখনোই বরদাস্ত করা যাবে না। আইন আইনের পথে চলবে। আমরা প্রশাসনকে অনুরোধ করব এই বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে।