মালদার অনাথ প্রতিবন্ধী বৃষ্টিকে দত্তক নিলেন কানাডার বিদেশি দম্পতি

মালদা: মাত্র ছয় মাস বয়সে প্রতিবন্ধী শিশু অভিভাবকহীন অনাথ হয়ে পড়েছিল। তাকে উদ্ধারের পর নিয়ে আসা হয়েছিল মালদার একটি শিশুদের অনাথ সেবাশ্রম কেন্দ্রে। সেখানে কোনওরকমে মানুষ হচ্ছিল অনাথ প্রতিবন্ধী শিশু ‘বৃষ্টি’। অবশেষে দুই বছরের অনাথ বৃষ্টির ভাগ্যে জুটল বিদেশি বাবা-মা। কানাডার শিল্পপতি দম্পতি অনলাইনের মাধ্যমে মালদার দুই বছরের অনাথ শিশু বৃষ্টিকে দত্তক নিলেন। রবিবার তারা সমস্ত রকম সরকারি প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করেই মালদা এসে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সহযোগিতা নিয়েই ওই অনাথ শিশুকে নিজের সন্তান হিসেবে দত্তক নেন। আগামী সপ্তাহে কলকাতার দমদম বিমানবন্দর থেকে ছোট্ট বৃষ্টিকে নিয়ে কানাডার উদ্দেশ্যে রওনা হবেন ওই বিদেশি দম্পতি। প্রতিবন্ধী অনাথ শিশুকে দত্তক নেওয়ার ঘটনায় কানাডার ওই দম্পতির আগ্রহকে সাধুবাদ জানিয়েছে জেলা প্রশাসনের কর্তারা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অনাথ ওই শিশুটি মালদা মেডিক্যাল কলেজের মাধ্যমেই সরকারি স্বীকৃতিপ্রাপ্ত মালদা শহরের হায়দারপুর এলাকার ‘সুনীতি শিশু গৃহে’ আসে। ওই সংস্থাটির পরিচালনায় রয়েছে হায়দারপুর সেল্টার অফ মালদা। এরপর থেকেই ওই শিশুটি লালন পালন ওই অনাথ আশ্রমে চলছিল। সংশ্লিষ্ট আশ্রমের কর্তৃপক্ষরাই শিশুটির নাম রাখে ‘বৃষ্টি’। জন্মগত অবস্থায় বৃষ্টি ছিল বাকজনিত সমস্যায় আক্রান্ত।
ওই স্বেচ্ছাসেবীর সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, কানাডার ওই দম্পতি আর্নেস্ট ফ্রিজেন (৪৩) এরিন জিন ফ্রিজেন (৩৫) অনলাইনের মাধ্যমেই ভারত সরকারের সেন্ট্রাল অ্যাডোপসেন রিসোর্স অথরিটি এই শিশুটিকে দত্তক নেওয়ার জন্য আবেদন জানায়। তার আগে মালদার এই সংস্থার পক্ষ থেকে সরকারি প্রক্রিয়া মেনেই বৃষ্টিকে দত্তক দেওয়ার জন্য নানা জায়গায় অনলাইনের মাধ্যমে জানানো হয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছিল বৃষ্টি বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু। এর কারণেই হয়তো অনেকেই ওকে দত্তক নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেনি। কিন্তু অবশেষে বৃষ্টি বাবা মা পেল তাও আবার বিদেশি।
হায়দারপুর সেল্টার অফ ক্লাবের সম্পাদক মৃন্ময় মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সরকারি নিয়ম অনুসারে দত্তক দেওয়ার সমস্ত নিয়ম প্রতিপালন করার পরে বৃষ্টি কানাডার এক দম্পতি দত্তক নিয়েছেন। আমরা খুব খুশি প্রকাশ করেছি। ওই বিদেশি দম্পতি আমাদের দেওয়া অনলাইন পোর্টালের বিজ্ঞাপন দেখেই খোঁজখবর নিতে শুরু করেন। এরপর ভারত সরকারের যাবতীয় প্রক্রিয়া মেনেই বৃষ্টিকে দত্তক নেন তাঁরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

11 + fourteen =