ফাইনালে সুনীল গোল করলে ভারত জেতে। পরিসংখ্যান এমনই বলছে। এই পরিসংখ্যান আরও জোরালো হল। ফিফা ক্রমতালিকায় ভারতের তুলনায় এগিয়ে লেবানন। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে লেবাননের বিরুদ্ধে নেমেছিল ভারত। গোল করতে পারেনি। গোল খায়ওনি। সেই ম্যাচে অবশ্য শুরু থেকে খেলেননি অধিনায়ক সুনীল ছেত্রী। ফাইনালে যেমন তারুণ্যের দাপট প্রয়োজন, তেমনই অভিজ্ঞতাও। শক্তিশালী লেবাননের বিরুদ্ধে সুনীল গোল করলেন, ভারতও জিতল। ফিফা ক্রমতালিকায় এগিয়ে থাকা লেবাননকে ২-০ ব্যবধানে হারিয়ে হিরো কন্টিনেন্টাল কাপে চ্যাম্পিয়ন ভারত। মঙ্গোলিয়ার বিরুদ্ধে ২-০ জয় দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করেছিল ভারত। কমপ্লিট হল লেবাননের বিরুদ্ধে ২-০ জয়ে। ভুবনেশ্বরেরর কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে ভারতীয় ফুটবল যেন নতুন স্বপ্নের বীজ রোপণ করল। বিশ্ব ফুটবলে এগোতে হলে শক্তিশালী দলের বিরুদ্ধে খেলে জিততে হবে। লেবাননকে হারিয়ে খেতাব, সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের আগে মানসিক ভাবে ভারতকে অনেক এগিয়ে রাখবে। ফাইনালে শুরু থেকে অবশ্য চেষ্টার ফল মিলল না। বিরতির পর টিম হাডলে সতীর্থদের পেপ টক দিলেন ক্যাপ্টেন সুনীল ছেত্রী। এরপরই খেলা ঘুরল। লেবাননের বিরুদ্ধে গ্রুপ পর্বের ম্যাচ ধরলে প্রায় দেড়শো মিনিট খেলে ফেলেছিল ভারত। গোলের দেখা পাওয়া যাচ্ছিল না। অবশেষে গোলের দেখা মিলল। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে রাইট ব্যাক নিখিল পূজারি ওভার ল্যাপে উঠেছিলেন। উইং থেকে নিখিল পূজারির ব্যাক হিল, ছাংতে বল ধরে কিছুটা দৌড়ে স্কোয়ার পাস। গোলের সামনে কোনও ভুল করেননি ক্যাপ্টেন সুনীল ছেত্রী। আন্তর্জাতিক ফুটবলে ৮৭তম গোলে সামনে থেকেই দলকে নেতৃত্ব দিলেন। চোখ খুলতেই গোল! সুনীলের গোলের পরই আক্রমণের ধার আরও বাড়ে ভারতের। পরিবর্ত হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন নাওরেম মহেশ। তাঁর এবং ছাংতে জুটি ক্রমশ ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে। ম্যাচের ৬৬ মিনিটে বক্সের বাঁ দিক থেকে মহেশের জোরালো শট। লেবানন গোলরক্ষক প্রাথমিক বিপদ থেকে রক্ষা করেন। বক্সে অপেক্ষায় ছিলেন ছাংতে। ফিরতি বলে চোখের পলকে গোল। দ্বিতীয়ার্ধে ২০ মিনিটের মধ্যেই জোড়া গোল। গ্রুপ পর্বে তিন ম্যাচে তিনটি গোল করেছে ভারত। একটিও গোল খায়নি। অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হল ভারত। ২০১৮ সালের পর ফের এই টুর্নামেন্ট জয়। সুনীলের গোলে অ্যাসিস্ট, এরপর গোল। লালিনজুয়ালা ছাংতের জন্য স্মরণীয় রাত। শুধু তাঁরই নয়, ভারতীয় ফুটবলেরও স্বপ্নের রাত বলা যায়।