শিক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করাই যায়, জানালেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য

’শিক্ষামন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করাই যায়। কারণ, ক্রীতদাস বলে আমাদের মানহানি করেছেন শিক্ষামন্ত্রী।‘ এবার শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর বিরুদ্ধে এই ভাষাতেই মুখ খুলতে দেখা গেল উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য রথীন বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এরই পাশাপাশি উপাচার্য এটাও স্পষ্ট করে দেন, ‘আমরা এভাবে ভাবতেই চাই না। কারণ মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী এবং আচার্য আমাদের অভিভাবক।’ একইসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে শীর্ষ আদালতের হস্তক্ষেপ অর্থাৎ সার্চ কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্তকেও স্বাগতও জানাতে দেখা গেছে তাঁকে। এরই রেশ টেনে রথীন বন্দোপাধ্যায় এও জানান, ‘আমাদের কাছে রাজনৈতিক দলের বিষয় নেই। আমরা গতকাল দেশের শিক্ষামন্ত্রীর কাছে গিয়েছি শিক্ষার প্রসারের লক্ষেই। আর ব্রাত্যবাবু রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী। কিন্তু উনি এক্স হ্যান্ডেলে যা বলছেন তাতে মর্মাহত।’

প্রসঙ্গত, বিশ্ববিদ্যালয়গুলির অচলাবস্থা কাটাতে পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তবর্তীকালীন উপাচার্য নিয়োগ করেছিলেন আচার্য। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্তা দত্ত দে, বিএড বিশ্ববিদ্যালয়ের সোমা বন্দ্যোপাধ্যায়, সংস্কৃত এবং বারাসত রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজকুমার কোঠারী, উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রথীন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সুশান্ত চক্রবর্তী। কিন্তু উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে রাজ্য ও রাজ্যপালের মধ্যে যে দ্বন্দ্ব, তা আরও বেশি প্রকট হয়ে ওঠে এই অন্তবর্তী উপাচার্য নিয়োগ ঘিরেই।

আর এই পাঁচ উপাচার্য কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের সঙ্গে দেখা করতেও গিয়েছিলেন। এই সাক্ষাৎকেই ভাল চোখে দেখেননি শিক্ষামন্ত্রী। এরপরই নিজের এক্স হ্যান্ডেলে শিক্ষামন্ত্রী লেখেন, ‘মিস্টার বন্ডের অনুমোদিত রাজ্য-পোষিত পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রীতদাস উপাচার্য আজ বিজেপির কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন। আশা করি, আদালত সব কিছু দেখছে। বাংলার উচ্চ শিক্ষা ব্যবস্থাকে ভেঙে ফেলা হচ্ছে।’ শিক্ষামন্ত্রীর এই মন্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক সমালোচনার ঝড় ওঠে বঙ্গ রাজনীতিতে। শুক্রবারই দেশের শীর্ষ আদালতে উপাচার্য নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার শুনানি ছিল। জট কাটাতে হস্তক্ষেপ করে শীর্ষ আদালত। এরপরই উপাচার্য নিয়োগ করতে একটি সার্চ কমিটির করার কথাও বলে শীর্ষ আদালত। রাজ্য সরকার, রাজ্যপাল ও ইউজিসির মনোনীত বিশেষজ্ঞদের থেকে কমিটির প্যানেল তৈরি হবে। তিন পক্ষের কাছে প্রস্তাবিত নামের তালিকা চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সুপ্রিম কোর্টের এই রায় নিয়ে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য জানান, ‘এই রায়ে বিরোধ মিটে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ হবে বলে আশা করি। আমাদের এই অন্তর্বর্তী উপাচার্য পদ নিয়ে স্থগিতাদেশ নেই। ফলে স্থায়ী উপাচার্য না আসা অবধি কাজ চালিয়ে যাব।’

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × one =