ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিসিআই) বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত মিলছে চলতি মাসের শেষেই। কারণ, এ সময়েই অনুষ্ঠিত হতে চলেছে বোর্ডের নির্বাচন। সংবাদসংস্থার খবর অনুযায়ী, এই নির্বাচন হবে লোধা কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী তৈরি আইনের ভিত্তিতে। জাতীয় ক্রীড়া আইন কার্যকর হতে এখনও সময় লাগবে, তাই বিসিসিআই আপাতত আর অপেক্ষা না করে লোধা আইন মেনেই নির্বাচন করতে চলেছে। ফলে আসন্ন ভোটে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদে পরিবর্তন দেখা যাবে।
প্রথমেই আসছে বোর্ড প্রেসিডেন্টের পদ। বর্তমান প্রেসিডেন্ট রজার বিনি ইতিমধ্যেই সত্তরের গণ্ডি পেরিয়ে গিয়েছেন। লোধা আইনে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, ৭০ বছরের বেশি বয়সী কেউ এই পদে থাকতে পারবেন না। সেই কারণে বিনিকে বিদায় নিতে হচ্ছে। এখন প্রশ্ন উঠছে—কে হতে পারেন তাঁর উত্তরসূরি? বোর্ডের প্রেসিডেন্ট পদে আগে যেমন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো ভারতীয় ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা অধিনায়ক ছিলেন, আবার বিনিও ছিলেন ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপ জয়ী দলের সদস্য। তাই বোর্ড এবারও কোনও হেভিওয়েট ক্রিকেটারকে প্রেসিডেন্ট করতে চাইতে পারে। এবারের নির্বাচনে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসতে চলেছে আইপিএল চেয়ারম্যান পদে। বর্তমান চেয়ারম্যান অরুণ ধুমাল ইতিমধ্যেই ছয় বছর ক্রিকেট প্রশাসনে কাটিয়ে ফেলেছেন।
লোধা আইন অনুযায়ী, তাঁকে এখন বাধ্যতামূলক কুলিং অফ পিরিয়ডে যেতে হবে। ফলে নতুন চেয়ারম্যান খোঁজা অনিবার্য হয়ে উঠেছে। সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে আছেন রাজীব শুক্লা এবং মুম্বই ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সচিব সঞ্জয় নায়েক। শুক্লা যদি চেয়ারম্যান হন, তাহলে বিসিসিআই সহ-সভাপতির পদে বসতে পারেন বিহার ক্রিকেট সংস্থার প্রধান এবং বিজেপি নেতা রাকেশ তিওয়ারি। বর্তমান বোর্ড কমিটির গঠনেও পরিবর্তন আসতে চলেছে। সচিব দেবজিৎ সাইকিয়া, সহ-সচিব রোহন দেশাই এবং প্রভতেজ ভাটিয়া ছাড়া প্রায় সকল গুরুত্বপূর্ণ পদেই নতুন মুখ দেখা যেতে পারে।
এর ফলে বোর্ডে নতুন নেতৃত্ব আসবে এবং ক্রিকেট প্রশাসনে এক নতুন অধ্যায় শুরু হবে বলেই মনে করা হচ্ছে। সব মিলিয়ে, আসন্ন বিসিসিআই নির্বাচন কেবল কয়েকজনের পদ পরিবর্তনের বিষয় নয়, বরং ভারতীয় ক্রিকেট প্রশাসনের ভবিষ্যৎ দিকনির্দেশনা নির্ধারণ করবে। নতুন প্রেসিডেন্ট ও আইপিএল চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বোর্ডে ক্ষমতার ভারসাম্যে বড় রদবদল ঘটবে। রজার বিনি এবং অরুণ ধুমালের বিদায়ের ফলে এক যুগের অবসান হবে, আর নতুন নেতৃত্বের হাতে বোর্ডের দায়িত্ব যাবে। এই পরিবর্তন শুধু প্রশাসনিক নয়, বরং ক্রিকেটে ভারতের অবস্থান ও ভাবমূর্তিতেও প্রভাব ফেলতে পারে।

