করোনার রেশ কাটেনি এখনও, তারই মাঝে নতুন করে আতঙ্ক তৈরি করছে সাইবেরিয়ার জম্বি ভাইরাস। বিশ্বায়নের প্রভাবে একের পর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয় নেমে আসছে। এরমধ্যে অন্যতম বিষয় হল বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে, বিশেষ করে উত্তর মেরুতে থাকা বরফ গলে যাওয়া। হিমবাহ ও বরফে ঢাকা অন্যান্য অংশগুলি বিশ্বায়নের জেরে গলে যাওয়ায়, একদিকে যেমন জলস্তর বাড়ছে, তেমনই আবার বরফের নীচে চাপা থাকা নানা বস্তু, ভাইরাসও বেরিয়ে আসছে, যা কয়েক লক্ষ বছর ধরে বরফের নীচে বন্দি ছিল। এমনই ঘটনা ঘটছে সাইবেরিয়ার বরফে ঢাকা অঞ্চলে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, সাইবেরিয়া থেকে বেশ কয়েক ধরনের জম্বি ভাইরাস (Zombie Virus) পাওয়া গিয়েছে। এরমধ্যে বেশ কয়েকটি মানবজাতির জন্য অত্যন্ত ভয়ঙ্কর।
বিজ্ঞানীদের একটি দল জানিয়েছেন, সাইবেরিয়ার ৭টি বরফ আবৃত অঞ্চল থেকে মোট ১৩ ধরনের ভাইরাসের নমুনা পাওয়া গিয়েছে। ওই ১৩টি ভাইরাসের মধ্যে একটি বরফের লেকের নীচ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, ওই ভাইরাসটি ৪৮ হাজার ৫০০ বছরের পুরনো অ্যামিবা ভাইরাস।
ফ্রেঞ্চ ন্যাশনাল সেন্টার ফর সায়েন্টিফিক রিসার্চের প্রধান মাইক্রোবায়োলজিস্ট জিন ম্যারি সম্প্রতিই একটি জার্নাল প্রকাশ করেছেন। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, সাইবেরিয়ার বরফের নীচে চাপা থাকা জম্বি ভাইরাস মানবজাতির জন্য় অত্যন্ত ভয়ঙ্কর হতে পারে। এই বিষয়ে আরও গবেষণার প্রয়োজন। বরফের নীচে দীর্ঘদিন ধরে চাপা থাকা এই ভাইরাস মানবজাতির জন্য কী কী বিপদ ডেকে আনতে পারে, সে বিষয়েও অনেক কিছুই এখনও অজানা।
একটি কোষের এই অ্যামিবার ‘কালচার’ করে দেখা গিয়েছে, এই জম্বি ভাইরাসের মধ্যে এখনও সংক্রামক প্যাথোজেন রয়েছে, যা ভয়ঙ্কর সংক্রমণ ছড়াতে পারে। প্রায় ৫০ হাজার বছরের পুরনো এই ভাইরাস অন্যান্য বস্তুকেও সংক্রমিত করতে পারে বলে জানা গিয়েছে। গাছ, প্রাণী বা মানবজাতিকেও সংক্রমিত করতে পারে, যা করোনা বা অন্যান্য সংক্রামক রোগের থেকেও ভয়ানক হতে পারে।