কোথা থেকে জানলেন মাদক নেওয়ার কথা? বাগুইআটির নিহত ছাত্রদের নিয়ে সৌগতর মন্তব্যে ক্ষুব্ধ পরিবার

কলকাতা:বাগুইআটির দুই কিশোর ‘খুনের’ ঘটনায় ‘মাদক’ তত্ত্ব উস্কে দিয়েছেন তৃণমূল নেতা তথা প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়। সদ্য সন্তান হারিয়ে শোকে পাথর দুই তরুণের পরিবার। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের প্রবীণ নেতার মন্তব্যে রীতিমতো আহত তাঁরা। সেই সঙ্গে মাদক সেবনের কথাও উড়িয়ে দিয়েছেন তাঁরা।

সম্প্রতি বাগুইআটির নিহত দুই কিশোর অতনু দে এবং অভিষেক নস্কর প্রসঙ্গে সৌগত রায় বলেছেন, “ড্রাগসের নেশা করত, এন-১০ ট্যাবলেট খেত।” বাইক কেনার জন্য যে ৫০ হাজার টাকার কথা উঠে আসছে, সেই টাকাও ওই কিশোর কোথা থেকে পেল, সেই নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সৌগত বাবু। বর্ষীয়ান সাংসদের এ হেন মন্তব্যের পর তীব্র ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন মৃত কিশোরদের পরিবারের লোকেরা। শোকার্ত পরিবারের প্রশ্ন,  কীসের ভিত্তিতে একথা বললেন তিনি। পুলিশ একবারের জন্যই এমনটা জানায়নি তারা নেশা করত।

অতনুর বাবার প্রশ্ন, ‘এই সময় এই ধরনের মন্তব্য করা কি ওনার উচিত হয়েছে? বাকিরাও তো এসেছিলেন। তাঁরা তো কেউ বলেননি। উনি কার কাছে শুনেছেন নেশা করার কথা? নাকি চোখে দেখেছন।’ তাঁর কথায়, রাজনীতি নয়, দোষীদের শাস্তি চান। টাকার প্রসঙ্গেও অতনুর বাবা বিশ্বনাথ দে বলেন, কোনওদিন ছেলের হাতে সেভাবে টাকা তুলে দেননি। কারণ, তাঁদের তেমন আর্থিক সঙ্গতি নেই। অত্যন্ত সাধারণভাবেই দুই পরিবারে দুই ছেলে বড় হচ্ছিল। তাছাড়া এই বাইকের ৫০ হাজার টাকার কথাও পরে ছেলেদের বন্ধু মারফত্ জেনেছেন।

সঙ্গে তিনি আরও বলেন, “এইভাবে কেন বলছেন? এইভাবে বলা উচিত নয়। আমরা তো কোনও রাজনীতির বিষয় আনছি না। সবাই আসছেন। সবার কাছেই বলছি শাস্তি চাই।” তৃণমূল সাংসদের মন্তব্যে অত্যন্ত বিরক্ত অতনু মা। সন্তানহারা মায়েরও এক প্রশ্ন, “তিনি কি আমার ছেলেকে দেখেছেন? তাঁর মনগড়া কথা বলে দিলেই তো হবে না। তিনি কি দেখেছেন বা তিনি কি নিজের হাতে সমস্ত কিনে দিয়েছেন আমার ছেলেকে?”

তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন অভিষেক নস্করের বাবাও। তিনি জানান, ছেলের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে মাত্র ছ’হাজার টাকা ছিল।  ঘরভাড়া দিয়ে সংসার চালান। সৌগত রায়ের মন্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন,  ‘আমাদের বাড়িতে সবাই আসলেন। কেউ বললেন না। উনি শুধু কোথা থেকে বললেন? এটা কার থেকে উনি শুনেছেন? তাঁকে নিয়ে আসুন। তাঁকে নিয়ে এসে এলাকা ঘুরে বলুক যে এখানে নেশা করত।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thirteen − 9 =