প্রয়াত ব্রিটেনের রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ, থামল সাত দশকের শাসনকাল

৯৬ বছর বয়সে প্রয়াত হলেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। দীর্ঘ অসুস্থতার পর বৃহস্পতিবার স্কটল্যান্ডের বালমোরাল প্রাসাদে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। দীর্ঘ ৭০ বছর ব্রিটেনের সিংহাসনে বসেছিলেন তিনি।বাকিংহাম প্রাসাদ বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছে, ‘বৃহস্পতিবার দুপুরে বালমোরাল প্রাসাদে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন রানি।’

শুক্রবার তাঁর দেহ লন্ডনে নিয়ে আসা হবে। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের প্রয়াণের খবর পেয়েই টুইটে শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

বৃহস্পতিবার সকালে রানির শরীরের অবস্থা নিয়ে তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেন চিকিৎসকরা। স্কটল্যান্ডের বালমোরাল প্রাসাদে ছিলেন তিনি। খবর পেয়েই ছুটে যান রাজ পরিবারের সদস্যরা। নেটমাধ্যমে উদ্বেগ প্রকাশ করেন ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস-সহ মন্ত্রী এবং সারা বিশ্বের রাজনীতিক, ধর্মীয় নেতারা।

গত বছর অক্টোবর থেকেই শরীর ভাল যাচ্ছিল না রানির। ভালভাবে হাঁটাচলাও করতে পারছিলেন না। বৃহস্পতিবার তাঁর অসুস্থতার খবর পেতেই বালমোরাল প্রাসাদে ছোটেন চার ছেলে-মেয়ে— যুবরাজ চার্লস (৭৩), রাজকুমারী অ্যান (৭২), যুবরাজ অ্যান্ড্রিউ (৬২), যুবরাজ এডওয়ার্ড (৫৮)। চার্লসের বড় ছেলে যুবরাজ উইলিয়ামও পৌঁছে যান। সুদূর আমেরিকা থেকে ছুটে এসেছেন উইলিয়ামের ভাই হ্যারি এবং তাঁর স্ত্রী মেগান।

মঙ্গলবারই ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী পদে লিজ ট্রাসকে নিয়োগ করেছিলেন রানি এলিজাবেথ। সিংহাসনে বসার পর থেকে ব্রিটেনের ১৫ জন প্রধানমন্ত্রীকে নিয়োগ করেছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার চিকিৎসকরা রানির শারীরিক অসুস্থতার কথা ঘোষণা করতেই নেটমাধ্যমে লেখেন, ‘গোটা দেশ এখন বাকিংহাম প্রাসাদের খবর নিয়ে উদ্বিগ্ন। আমার এবং গোটা ব্রিটিশ যুক্তরাজ্যের চিন্তায় এখন রানি এবং তাঁর পরিবার।’ ক্যান্টারবেরির আর্চবিশপ জাস্টিন ওয়েলবি জানিয়েছিলেন, রানির সুস্থতা প্রার্থনা করছেন তিনি। প্রসঙ্গত, চার্চ অব ইংল্যান্ডেরও প্রধান ছিলেন রানি।

বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন দ্বিতীয় এলিজাবেথ। ব্রিটেনের প্রথা ভেঙে বাকিংহ্যাম প্যালেসের বাইরে থেকে দেশের নতুন প্রধানমন্ত্রীকে নিয়োগ করা হয়। আচমকাই রানির শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় নতুন মন্ত্রিসভার শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান স্থগিত করে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে প্রিভি কাউন্সিলের বৈঠকও বন্ধ করে দেওয়া হয়।

১৯৫৩ সালে মাত্র ২৫ বছর বয়সে ব্রিটেনের রানি হিসাবে অভিষেক হয় দ্বিতীয় এলিজাবেথের। রাজপরিবারের সরাসরি উত্তরাধিকারী হওয়ার সূত্রেই তাঁর মাথায় উঠেছিল রানির মুকুট। ব্রিটেনের শাসন ব্যবস্থা পরিচালনার পাশাপাশি আলোচনার বিষয় হয়ে উঠেছিল রানির সাজপোশাকও। মাঝে মাঝে রাজপরিবারের অন্যান্য সদস্যদের কার্যকলাপের ফলে অস্বস্তিতে পড়তে হলেও রাজপরিবারের হাল ধরেছেন দক্ষ হাতে। তাঁর মৃত্যুতে ব্রিটেনে নেমে এল শোকের ছায়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × two =