গুয়াতেমালায় এক কিশোরকে অপহরণ ও খুনের অভিযোগে অভিযুক্ত ৩ জনকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারল উন্মত্ত জনতা। প্রথমে এক অভিযুক্তকে থানা থেকে ছিনিয়ে আসা হয়। পরে তাকে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়। ফের থানায় হানা দিয়ে ছিনিয়ে নিয়ে আসা হয় বাকি দুই অভিযুক্তকে। প্রথম জনের মতোই পরিণতি হয়েছে তাদেরও। নিহত তিন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এক ১১ বছর বয়সী কিশোরকে প্রথমে অপহরণ এবং পরে হত্যা করার অভিযোগ ছিল। ঘটনার পর থেকেই ফুঁসছিল গ্রামবাসীরা। গত ২১ অগস্ট পুলিশ তিন সন্দেহভাজনকে আটক করতেই সেই ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটে। ঘটনাটি ঘটেছে সেদেশের কোলোটানাঙ্গো প্রদেশের জেমাল গ্রামে।
পুলিশের দাবি, ওই সন্দেহভাজনকে জেমাল গ্রামের পাশে এক জঙ্গলের মধ্যে নিয়ে গিয়েছিল উন্মত্ত জনগণ। তাঁকে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে জানতে চাওয়া হয় ফ্রেডি মেন্ডেজ কোথায়। জনতার চাপের মুখে সন্দেহভাজন ওই ব্যক্তি জানিয়েছিল, ১১ বছরের শিশুটিকে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। একটি গর্তে তার দেহ কবরও দেওয়া হয়েছে। এরপরই ক্ষিপ্ত গ্রামবাসীরা ওই গাছে বাঁধা অবস্থাতেই তার গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। জীবন্ত পুড়ে মারা যায় সে। উত্তেজিত জনতা এরপর আবার থানায় ফিরে এসেছিল। অপর দুই অপহরণকারীকেও তারা একইভাবে ছিনিয়ে নিয়ে গিয়ে পুড়িয়ে মারে বলে অভিযোগ।
গুয়াতেমালা ন্যাশনাল পুলিশের মতে, এই ঘটনার সূত্রপাত ঘটেছিল গত ১২ অগস্ট। ওই দিনই ১১ বছর বয়সী ফ্রেডি মেন্ডেজকে অপহরণ করা হয়েছিল। অপহরণকাররা পরে তার মুক্তিপণ হিসেবে ১৯০০ মার্কিন ডলার বা ভারতীয় মুদ্রায় দেড় লক্ষ টাকারও বেশি অর্থ দাবি করেছিল। ফ্রেডি যে জীবিত আছে, তা প্রমাণ করার জন্য, অপহরণকারীরা শিশুটির পরিবারকে একটি ছবিও পাঠয়েছিল। তাতে ফ্রেডির পাশে অপহরণকারীদের একজনকে দেখা গিয়েছিল। তার পরণে ছিল কালো জামা এবং নীল রঙের জিন্স। মুখ ঢাকা ছিল মুখোশে। আর হাতে ছিল একটি শটগান।
শিশুটিকে অক্ষত অবস্থায় ফিরে পেতে, ফ্রেডির পরিবার প্রথমে এই অপহরণের বিষয়ে পুলিশকে কিছুই জানায়নি। এমনকী, অপহরণকারীদের দাবি মতো মুক্তিপণের পুরো অর্থই দিয়েছিল। কিন্তু, তারপরেও ফ্রেডি বাড়ি ফেরেনি। এরপরই পুলিশে খবর দিয়েছিলেন ফ্রেডির বাবা-মা। পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছিল তিন সন্দেহভাজনের নাম – সেলভিন পেরেজ (২৪), স্যামুয়েল গোডিনেজ (৩৮) এবং ওভিডিও মেন্ডেজ (২৪)। সোমবার ওই তিনজনকে আটক করে স্থানীয় থানায় নিয়ে আসা হয়েছিল। গুয়াতেমালা ন্যাশনাল পুলিশ দাবি করেছে, এরপরই বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসীরা দলে দলে থানার সামনে উপস্থিত হয়েছিল।