আম (mango) উৎপাদনের ক্ষেত্রে লোকসান থেকে বাঁচতে ড্রাগন চাষে আগ্রহ বাড়িয়েছেন মালদার আদিবাসী অধ্যুষিত হবিবপুর, বামনগোলা ব্লকের অনেক চাষিরা। একইভাবে চাঁচল মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে শুরু হয়েছে ড্রাগন ফলের চাষ। এক্ষেত্রে সমস্ত রকমভাবে সহযোগিতা এবং পরামর্শ দেওয়ার কাজ শুরু করেছে উদ্যান পালন দপ্তর। চাষিদের বক্তব্য, প্রতিবছর ঝড় -বৃষ্টির কারণে আম চাষ করেও মোটা টাকা আয় হচ্ছে না। কিন্তু স্বল্প খরচায় ড্রাগন ফল চাষ করে ব্যাপক লাভ মিলছে। যার ফলে ধীরে ধীরে এই চাষেই আগ্রহ বাড়াতে শুরু করেছেন মালদার চাষিরা। উদ্যানপালন দপ্তরের মালদার উপ-অধিকর্তা সামন্ত লায়েক জানিয়েছেন, ড্রাগন ফল অত্যন্ত পুষ্টিকর এবং বিভিন্ন রোগ নিধনের ক্ষেত্রে অতুলনীয়। ক্যানসার, হার্ট অ্যাটাক, ডায়াবেটিস, সুগার, চোখে চশমা নেওয়ার প্রবণতা, হাঁটু ব্যথা এইসব রোগ নিধনের ক্ষেত্রে ড্রাগন ফলের উপকারিতা দারুনভাবে রয়েছে। এমনকী, করোনা সংক্রমণের ঠেকাতেও ড্রাগন ফল অত্যন্ত উপকারি। এই ফলের একটি অত্যন্ত উপযোগী উপাদান হচ্ছে অ্যান্টি-অক্সিজেন। যার ফলে এই ফল খাওয়া খুব দরকার। ড্রাগন ফল চাষ করে লাভ করছেন চাষিরা। উদ্যানপালন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ড্রাগন ফল বিঘার পর বিঘা চাষ হয় না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে ৩ থেকে ৪ বিঘা এবং ১০ বিঘা এলাকা জুড়ে চাষিরা ড্রাগন ফল চাষ করছেন। মালদার হবিবপুর, বামনগোলা, চাঁচল মহকুমার বেশ কিছু ব্লকে ড্রাগন ফল চাষ হচ্ছে। এবছর কিছু চাষিকে ড্রাগন ফল চাষ করার পদ্ধতি শেখানো হয়েছে উদ্যানপালন দপ্তরের মাধ্যমে। বামনগোলা ব্লকের ড্রাগন ফল চাষি বীরেন মণ্ডল বলেন, এবছর আম চাষে অনেকটাই লোকসান হয়েছে। ঝড়-বৃষ্টি তার ওপর তীব্র দাবদহ সবদিক দিয়ে আমের ক্ষতি করেছে। ফলে লাভ করতে পারেনি। কিন্তু আগে থেকেই ড্রাগন ফল চাষ করে আসছি। সেই তুলনায় ড্রাগন ফল পাইকারদের কাছে বিক্রি করে আমের লোকসান মিটিয়ে নিয়েছি। তাই এখন আম চাষ থেকে ড্রাগন ফলের চাষে আগ্রহ বেড়েছে। উদ্যানপালন দপ্তর জানিয়েছে, মূলত জুন মাসে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু হয়। গাছে ফল আসতে এক বছর সময় লাগে। সিমেন্টের একটি পিলার করে এই গাছটিকে লাগানো হয়। সিমেন্টের উপরের অংশে একটি টায়ারও লাগানো হয়। তাতেই ড্রাগন ফল ফোটে। গত বছর থেকে যারা চাষ শুরু করেছিল তাদের ফল ইতিমধ্যে বাজারে বিক্রি হতে শুরু করেছে। এবারেও চাষিরা ভালো লাভ করবে বলে আশা করা হচ্ছে।