উদ্ধার হওয়া কালো টাকা কোথায় যায়? কোথায় রয়েছে অর্পিতার ফ্ল্যাট থেকে মেলা কোটি কোটি টাকা?

কলকাতা: টালিগঞ্জের পর বেলঘড়িয়ার ফ্ল্যাট। এসএসসি দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃত প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দুটি ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছে প্রায় ৫০ কোটি টাকা। প্রচুর সোনা, বিদেশি মুদ্রা, নথি।

ইডির তল্লাশি ফ্ল্যাটে টাকা উদ্ধার আর তার গণনা এখন ভোট গণনার চেয়েও নাটকীয়।আর একই সঙ্গে জনমনে প্রশ্ন এত টাকা! কী হবে? কেথায় যাবে?

কালো টাকা উদ্ধারের পর কী হয়? নিয়ম কী?

কোনও আর্থিক দুর্নীতির তদন্তে নেমে হিসাব বহির্ভূত টাকা উদ্ধার হলে তা আদালতের অনুমতিতে ব্যাঙ্কে কারেন্ট অ্যাকাউন্ট খুলে জমা করা হয়। তদন্তকারী এসপি পদ মর্যাদার কোনও আধিকারিকের নামে সেটি খোলা হয়। কারেন্ট অ্যাকাউন্টে রাখা টাকা ব্যাঙ্ক নিজেদের মতো বাজারে খাটায়।

খোলা টাকা ব্যাঙ্কে কারেন্ট অ্যাকাউন্টে জমা পড়লেও খামবন্দি টাকা থাকলে তা গুনে আদালতের অনুমতিতে চলে যায় মালখানায়। কত টাকা কীভাবে মিলেছে সবিস্তারে আদালতকে জানাতে হয়।বিচার প্রক্রিয়া শেষ হলে আদালতকে জানিয়ে তা কারেন্ট অ্যাকাউন্টে জমা করা হয়। মামলা শেষ হলে, তা সরকারের সম্পত্তি বলে বিবেচিত হয়।

তবে কিছুদিন আগেই একটি ঘটনায় অভিযুক্তদের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া নগদ টাকা রাখা ছিল মালখানায়। মালখানা তালা বন্ধ। বাইরে সশস্ত্র পাহারা। তদন্তকারী অফিসাররা নিশ্চিত ছিলেন। কেউ মালখানায় ঢুকে ওই নগদ টাকা চুরি করতে পারবে না।বেশ কয়েক মাস পরে মালখানার তালা খুলে দেখা গেল, অনেক নোট উধাও। কিছু ছেঁড়াখোঁড়া। তদন্তকারীদের মাথায় হাত। কিছু নোট ইঁদুরে খেয়ে গিয়েছে। বাকি খেয়েছে উইয়ে।

এখন আর তাই ও পথে হাঁটেন না সিবিআই, ইডি, আয়কর দফতরের অফিসাররা। বেআইনি আয়ের খোঁজে তল্লাশি চালিয়ে নগদ উদ্ধার হলেই তা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ইডি-র অ্যাকাউন্টে জমা করে দেওয়া হয়। বা ব্যাঙ্কে ইডি-র নিজস্ব ভল্টে রেখে দেওয়া হয়।এ ক্ষেত্রে যেহেতু টাকার অঙ্ক একেবারের কোটির গণ্ডি ছাড়িয়েছে তাই তা নিয়ে জনতারও কৌতূহলের শেষ নেই।

ইডি সূত্রের দাবি, উদ্ধার হওয়া নগদ টাকা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ভল্টে রাখা হয়েছে। কারণ, কোটি কোটি টাকা নগদ বাজেয়াপ্ত হলেও খাতায়-কলমে টাকা, বিদেশি মুদ্রা, গয়নার মালিক এখনও অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ই। ইডি-কে এ বার আদালতে গিয়ে প্রমাণ করতে হবে, অর্পিতা ওই সব বেআইনি পথে আয় করেছেন ও শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতি থেকেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাত ঘুরে অর্পিতার কাছে এই অর্থ এসেছে। সে ক্ষেত্রে নগদ টাকা পাকাপাকি বাজেয়াপ্ত করে তা কেন্দ্রীয় সরকারের রাজকোষে জমা হবে।

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four − three =