অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে টিকটিকি-সহ খিচুড়ি রান্নার অভিযোগ, অসুস্থ ৯ শিশু-সহ ৩ প্রসূতি

সুজিত ভট্টাচার্য, পূর্ব বর্ধমান: অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে টিকটিকি সহ রান্না করা খিচুড়ি খেয়ে অসুস্থ ৯ জন শিশু ও ৩জন প্রসূতি। বুধবার এমনই অভিযোগ ওঠে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুর ব্লকের সেলিমাবাদ গ্রামের মীরপাড়া অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে। অসুস্থ শিশু ও প্রসূতিদের দ্রুত জামালপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। খবর পেয়ে ব্লকের বিডিও ও সিডিপিও হাসপাতালে পৌঁছন। এদিকে ঘটনা জানাজানি হতেই এলাকায় ব্যাপক আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনায় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কর্মীদের গাফিলতির অভিযোগ ওঠে। কি ভাবে এই ঘটনা ঘটল তার তদন্ত শুরু করেছে ব্লক প্রশাসন। শিশু ও গর্ভবতী মহিলাদের পুষ্টির জন্য অঙ্গনওয়ারি কেন্দ্র থেকে দেওয়া হয় রান্না করা পুষ্টিকর খাবার। অভিযোগ, এদিন সেই খাবারে অসাবধানতাবশত একটি টিকটিকি পড়ে গিয়ে খাবারে বিষক্রিয়া ঘটে।
খাবার পরিবেশন করার সময় বিষয়টি নজরে না আসলেও এক শিশুর অভিভাবক খিচুড়ির মধ্যে টিকটিকি পরে থাকতে দেখে সকলকে খবর দেন। যদিও বিষয়টি নজরে আসার আগেই অনেকেই সেই খিচুড়ি বাড়ি নিয়ে গিয়ে খেয়েও ফেলেন। আর ওই খিচুড়ি খেয়েই ভয়ে আতঙ্কে অসুস্থতা অনুভব করতে শুরু করে শিশুরা। প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, জামালপুর ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার সেলিমাবাদ মীরপাড়া এলাকায় ৪০৯ নম্বর অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রটি রয়েছে। ওই অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শিশু ও গর্ভবতী মিলিয়ে ওই গ্রামের ৫৬ জনকে পুষ্টিকর খাবার দেওয়া হয়। এদিনও সকলের জন্য খিচুড়ি রান্না হয়। বেলা ১০টার মধ্যে রান্না শেষ হলে শিশু ও গর্ভবতী মহিলারা নিজেদের পাত্রে সেই খিচুড়ি নিয়ে বাড়িতে চলে যান। বাড়িতে বসে খিচুড়ি খেতে গিয়ে এক শিশুর অভিভাবক বিষয়টি লক্ষ্য করেন যে খিচুড়ির মধ্যে কিছু একটা পরে আছে।
সেটিকে তুলে দেখেন ওটা একটা আস্ত টিকটিকি। তাঁরাই ছুটে গিয়ে গ্রামের অন্যান্য শিশুদের পরিবার ও গর্ভবতী মহিলাদের পরিবারকে বিষয়টি জানান। ওই খিচুড়ি নিয়ে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে গিয়ে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে শিক্ষিকা ও রাঁধুনিকে দেখানো হয়। অভিভাবকরা জানিয়েছে, ওই খাবার সহ টিকটিকি ফেলে দেন দিদিমণি। এবং এলাকাবাসীকে খিচুড়ি না খাওয়ার জন্যে বলা হয়। ততক্ষণে যে যে শিশুরা খুচুড়ি খেয়ে ফেলেছিল তাঁদের অভিভাবকরা ঘটনার কথা জেনে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। ভয়ে আতঙ্কে শিশুরা শারীরিক অসুস্থতা অনুভব করলে দুপুরে তাঁদের জামালপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা শিশুদের শারীরিক অবস্থা খতিয়ে ৬ ঘণ্টা তাদের অবজারভেশনে রাখার পরামর্শ দেন পরিবারের সদস্যদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × four =