দীর্ঘদিন ধরেই বাড়িতেই শিকলবন্দি হয়ে গিয়েছেন পরিবারের একমাত্র মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলে। সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত ও প্রশাসনের কাছে ছেলের চিকিৎসা করার আবেদন জানিয়েছেন অসহায় বৃদ্ধ বাবা – মা। ঘটনাটি ঘটেছে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার কলমপাড়া গ্রামে। যদিও বিষয়টি জানতে পেরে ওই যুবককে শিকলমুক্ত করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করানোর আশ্বাস দিয়েছে হরিশ্চন্দ্রপুর পঞ্চায়েত ও প্রশাসন কর্তৃপক্ষ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কলমপাড়া এলাকার বাসিন্দা ভ্যানচালক সনাতন দাসের দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। সনাতন দাসের স্ত্রী চিনু দাস পরিচারিকার কাজ করেন। বড় ছেলে ছোটন দাস (৩৮)। ছোট থেকেই দুর্ঘটনার জেরে মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছে। তারপর থেকে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার পাগলামিও বেড়ে গিয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে বেশ কিছু দিন চিকিৎসা করানো হয়েছিল কিন্তু সফল হয়নি। এদিকে ছেলের ব্যয়বহুল চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছে না দরিদ্র ভ্যান চালক সনাতন দাসের। তাই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ছেলে ক্রমেই দিনেদিন হিংস্র হয়ে উঠেছে। পাড়ার বিভিন্ন জায়গায় ভাঙচুর থেকে লোকজনকে মারধরও করছে। তাই বাধ্য হয়ে অভিভাবকেরা নিজের সন্তানকে শিকলে বেঁধে রাখতে বাধ্য হয়েছেন। এদিকে মানসিক ভারসাম্যহীন ছেলের চিকিৎসা করাতে না পেরে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন বৃদ্ধ সনাতন দাস। তিনি বলেন, ছেলের প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট পাইনি। সংশ্লিষ্ট এলাকার পঞ্চায়েত ও প্রশাসনের সহযোগিতা না মেলায় ছেলে আস্তে আস্তে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ছে।
হরিশ্চন্দ্রপুরের বিধায়ক তাজমুল হোসেন জানিয়েছেন, পঞ্চায়েতের তরফ থেকে অবিলম্বে ওই ছেলেটিকে প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট প্রদান করার ব্যবস্থা করা হবে। আমরা পরিবারটির সঙ্গে দেখা করতে যাব। হরিশ্চন্দ্রপুর ব্লক তৃণমূলের চেয়ারম্যান সঞ্জীব গুপ্তা জানিয়েছেন, আমরা দলের পক্ষ থেকে অবিলম্বে চেষ্টা করব যাতে ছেলেটি চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যায়। তার সঙ্গে সঙ্গে পঞ্চায়েতের তরফ থেকে অবিলম্বে ওই ছেলেটিকে প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট দেওয়ার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হবে।